ইসির অধিকতর তদন্ত কিসের ভিত্তিতে, প্রশ্ন নিবন্ধন প্রত্যাশী ‘মৌলিক বাংলা’র
কোন রিপোর্টের ভিত্তিতে ১০টি রাজনৈতিক দলকে অধিকতর তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে—গোয়েন্দা সংস্থার নাকি মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের?—এই প্রশ্নের উত্তর নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছে নিবন্ধনপ্রত্যাশী রাজনৈতিক দল মৌলিক বাংলা।
আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে পঞ্চমবারের মতো চিঠি জমা দেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ সজীব।
দলটির অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন ও তদন্ত প্রক্রিয়ায় অসামঞ্জস্য ও অনিয়ম রয়েছে; এ বিষয়ে তারা স্বতন্ত্র, স্বচ্ছ ও পূর্ণ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
সাদেক আহমেদ সজীব অভিযোগ করে বলেন, তদন্তে মাঠপর্যায়ের কাজ করছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, আবার একই সময়ে গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই মাঠে তদন্ত করছে। এই দুই ধরনের তদন্ত একে অপরের বিপরীতাভিমুখী। প্রশ্ন হচ্ছে, কোন রিপোর্টের ভিত্তিতে ১০টি দলকে অধিকতর তদন্তে নেওয়া হয়েছে—গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে, নাকি মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের তদন্তে?
সাদেক আহমেদ সজীব আরও বলেন, গত আগস্ট থেকে তদন্ত চললেও এখন পর্যন্ত কমিশনের কোনো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে ‘মৌলিক বাংলা’র দেখা হয়নি। আমরা আজ পঞ্চমবারের মতো চিঠি দিয়েছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সিনিয়র সচিব ও নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বারবার আবেদন করেও কোনো সাড়া পাইনি।
২০১২ সালে মৌলিক বাংলার জন্ম এবং ২০১৮ সালে দলটির নিবন্ধনের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে সাদেক আহমেদ সজীব বলেন, সেই সময় আমাদের নিবন্ধনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল, পরে তদন্ত তালিকা থেকেও বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু কেন—তা আমরা জানতে পারিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত দলটির সভাপতি খান শইব আমান বলেন, একই বিষয়ের ওপর চারবার তদন্ত চালানো হয়েছে। এতে আমাদের সাধারণ নেতাকর্মীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। একবারের তদন্তে ১৪ দিন সময় লাগে, চারবারে দুই মাস পার হয়ে যায়। আমাদের নেতাকর্মীদের সততা যাচাই করতে চাইলে তাদের ব্যাংক ব্যালেন্সই যথেষ্ট প্রমাণ।
খান শইব আমান বলেন, গতকাল নির্বাচন কমিশনের সামনে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনাও উদ্বেগজনক। আমরা আশঙ্কা করছি, এ ধরনের ঘটনা নির্বাচনি পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা।
দলটির নেতারা জানিয়েছেন, তারা সুষ্ঠু বিচার ও নিরপেক্ষ তদন্ত চায় এবং আগামীকালও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য চিঠি দেবে। সংবাদ সম্মেলন শেষে নেতারা সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং জনগণের সামনে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করার অঙ্গীকার করেন।
২০১২ সালে গঠিত মৌলিক বাংলা ২০১৮ সালে নিবন্ধনের আবেদন করেছিল, তবে সেই আবেদন গ্রহণ না হওয়ায় তারা এখনও তদন্ত প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। দলটির দাবি, কমিশনের নিবন্ধন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা নির্বাচন ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতার পূর্বশর্ত।

নিজস্ব প্রতিবেদক