কমলগঞ্জে কাত্যায়নী পূজা শেষ, ধলাই নদীতে ভক্তদের গঙ্গাস্নান
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগানে সনাতনীদের আয়োজনে মাসব্যাপী ব্রত পালনের পর কাত্যায়নী পূজা শেষ হয়েছে। কার্তিক মাসব্যাপী এই ব্রত পালন শেষে মঙ্গলবার রাত থেকে বাগানের বিভিন্ন মন্দিরে শুরু হয় হরিনাম কীর্তন, যা চলে গভীর রাত পর্যন্ত।
পরদিন বুধবার (৫ নভেম্বর) ভোররাত থেকেই পূজার মূল আকর্ষণ গঙ্গাস্নান ও পূজা-অর্চনায় অংশ নিতে ধলাই নদীর তীরে হীরামতি এলাকায় সমবেত হন হাজারো ভক্ত। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী স্নান ও পূজার্চনা চলে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। এই সময়ে ভক্তরা স্নান করে ভিজে বস্ত্র পরিহিত অবস্থায় নদীর তীরে মাটির তৈরি কাত্যায়নী মূর্তির সামনে চন্দন, দ্বীপ, ফল, পান, নবপত্র, মালা ও ধূপ দিয়ে পূজা করেন।
গঙ্গা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লক্ষ্মীনারায়ণ করি (দাদু), সহ-সভাপতি পার্থ কাহার ও সাধারণ সম্পাদক রাজু করি জানান, শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণের দশম স্কন্ধের দ্বাবিংশ অধ্যায়ে এই কাত্যায়নী ব্রতের উল্লেখ আছে। কাহিনি অনুযায়ী, ব্রজের গোপীগণ শ্রীকৃষ্ণকে পতিরূপে কামনা করে সমগ্র কার্তিক মাস জুড়ে এই ব্রত পালন করেন। এই এক মাস মহিলারা মশলাবিহীন খিচুড়ি ও সিদ্ধ খাবার গ্রহণ করেন এবং প্রতিদিন সকালে ধলাই নদীতে স্নান শেষে নদীর তীরে মাটির কাত্যায়নী মূর্তি গড়ে দেবীর পূজা করেন। এ বছর চা শ্রমিকদের ২৫তম কাত্যায়নী পূজা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।
পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যরা নদীর ঘাটে স্নান করতে আসা ভক্ত ও পূজারীদের মধ্যে প্রসাদ হিসেবে খিচুড়ি বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য ও শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক মেয়র, ন্যাশনাল টি কোম্পানির পরিচালক মো. মহসিন মিয়া মধু, মাধবপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক দীপন কুমার সিনহা, মাধবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপিনেতা পুষ্প কুমার কানু, বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ পূজা উদযাপন কমিটির নেতা ও স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মহাপ্রসাদ বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

আহাদ মিয়া, মৌলভীবাজার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ)