শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আনোয়ার হোসেন এমান (৩৮) নামে এক নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে। পরে গোপনে দাফনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পুলিশ উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকার নোয়াপাড়া গ্রামে। নিহত এমান ওই গ্রামের ওসমান মিয়ার ছেলে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াপাড়া গ্রামের মফিজুর রহমানের ছেলে ফারুক মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে মাদক সেবন করে আসছিলেন। গত মঙ্গলবার সকালে ফারুক প্রকাশ্যে মাদক সেবন করলে আনোয়ার হোসেন এমান তাকে বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফারুক এমানকে এলোপাতাড়ি পেটাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তার বাবা মফিজুর রহমানও হামলায় যোগ দেন।
এমানের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে বাবা-ছেলে দুজনই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় পরিবারের সদস্যরা গুরুতর আহত এমানকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এমানের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, এমানের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর ওই গ্রামের প্রভাবশালী মহল এমানের পরিবারকে মামলা না করতে চাপ প্রয়োগ করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তারা জোরপূর্বক ফারুকের পরিবারের সঙ্গে আপসরফার জন্য বৈঠকও বসায়। খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
নিহতের ভাগনে মো. রিয়াদ বলেন, আমার মামা নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন। মঙ্গলবার ফারুক ও তার বাবা মফিজুর রহমান তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান। শুনেছি, মাদক সেবনে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এমান নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হচ্ছিল বলে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

মনোয়ার হোসেন, কুমিল্লা (চৌদ্দগ্রাম)