আবু সাঈদ হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে পুলিশের প্রাণপণ চেষ্টা
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দুই হাত প্রসারিত করে পুলিশের সামনে দাঁড়ানো সেই আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনাটি এনটিভির কল্যাণে দেখেছে দেশ ও বিশ্ববাসী। তবুও ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে পুলিশ-প্রশাসন। রংপুরে দিনে-দুপুরে ঘটা এই হত্যাকাণ্ডটিকে নিছক ‘মাথার আঘাতে মৃত্যু’ বলে চালিয়ে দিতে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে প্রথমে প্রলোভন, পরে ভয়ভীতি দেখায় পুলিশ। পুলিশের হুমকি, মরিয়া চেষ্টা সত্ত্বেও অনড় ছিলেন সেই চিকিৎসক।
মানবতাববিরোধী এই অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল-১ এ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদানকালে আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা ও হত্যা পরবর্তী এসব ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেছেন তিনজন সাক্ষী। ওই সময় চারবার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয় বলে সাক্ষীদের বর্ণনায় উঠে এসেছে।
চলতি বছরের ৩ আগস্ট এ মামলার প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ২৮টি কার্যদিবসে মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দেন। গত ৮ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য ও জেরা শেষ করা হয়। এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনাটি অন্যতম। এ ঘটনায় আদালতে তিনজন সাক্ষ্য প্রদান করেন। আদালতে তাদের জবানবন্দিতে উঠে আসে ঘটনার নির্মমতা।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বদলাতে প্রলোভন
আবু সাঈদের মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রাজিবুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালকে বলেন, শহীদ আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ না করতে প্রথমে তাঁকে নানা প্রলোভন, এক পর্যায়ে হুমকিও দেওয়া হয়।
সাক্ষ্যদানকালে ডা. রাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমি রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলাম। ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই আমি শহীদ আবু সাঈদের মরদেহের ময়নাতদন্ত করি। আবু সাঈদের শরীরে অনেক পিলেট (অস্ত্র থেকে ছোঁড়া ধাতব গোলার ছোট অংশ) পাওয়া যায়। পিলেটবিদ্ধ হয়ে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণজনিত কারণে আবু সাঈদের মৃত্যু হয়েছে বলে পোস্টমর্টেম রিপোর্টে উল্লেখ করি। মতামতসহ আমার করা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট তাজহাট থানার তদন্ত কর্মকর্তাকে দিই। কিন্তু তিনি সেই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে নতুন করে লিখতে বলেন। এভাবে তিনি তিনবার আমার প্রতিবেদনগ্রহণ না করে আমাকে ফিরিয়ে দেন।’
ডা. রাজিবুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘২০২৪ সালের ৩০ জুলাই রংপুর মেডিকেলের ভাইস প্রিন্সিপালের রুমে রংপুর সিটি এসবির পুলিশ সুপার (এসপি) সিদ্দিক, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি মো. আবু মারুফ হোসেন, স্বাচিপের রংপুর মেডিকেলের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. সারোয়াত হোসেন চন্দন আমাকে তাদের মতো করে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দিতে চাপ দেন। এ সময় পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা রুমের বাইরে অবস্থান করছিলেন। ওনারা প্রথম থেকেই আমাকে বলতে থাকেন, আবু সাঈদের মাথায় ইনজুরি আছে, সেটা ফোকাস করতে হবে। তারা আমাকে তাদের মতো করে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দিতে চাপ দেন ও ভয়ভীতি দেখান। তারা আমাকে আবু সাঈদের প্রতিবেদনে বুলেট ইনজুরির পরিবর্তে হেড ইনজুরি ও নিউরোজেনিক শক লিখতে বলেন। তাদের কথামতো প্রতিবেদন না দিলে আমার বিরুদ্ধে মামলা হবে হুমকি দিয়ে বলেন, আমার বিষয়ে নাকি গোয়েন্দা রিপোর্ট আছে।’
আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বদলাতে একপর্যায়ে নানা প্রলোভন দেওয়া হয় উল্লেখ করে ডা. রাজিবুল ইসলাম জবানবন্দিতে বলেন, ‘তারা আমাকে সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড ঘুরে আসার প্রলোভন দেন। আমি বলি, আমার পাসপোর্ট নেই। তখন তারা আমাকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দুই সপ্তাহ কক্সবাজারে ঘুরে আসার বিকল্প প্রস্তাব দেন। সবকিছুর ব্যবস্থা তারা করবেন বলেও জানান। তবে আমি তাদের কথায় রাজি হইনি। আমি ভাইস প্রিন্সিপাল স্যারকে বলি, স্যার আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার দৃশ্য টিভিতে লাইভ সম্প্রচার হয়েছে এবং সারা বিশ্ব ঘটনাটি দেখেছে। আমি যদি এই হত্যাকে হেড ইনজুরি (মাথায় আঘাত) বলে প্রতিবেদন দেই, তাহলে সারা বিশ্বের মানুষ ডাক্তার সমাজকে ঘৃণার চোখে দেখবে।’
স্বাচিপের অধ্যাপক ডা. চন্দন পেশাগত উন্নতির প্রলোভন দেন জানিয়ে চিকিৎসক রাজিবুল ইসলাম বলেন, ‘ড. চন্দন আমাকে বলেন, নেত্রী (শেখ হাসিনা) তোমার ব্যাপারে কনসার্ন। তোমার ব্যাপারটা আমরা দেখব। পুলিশ যেভাবে চায়, সেভাবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাও। কিন্তু এত কিছুর পরও আমি আমার জায়গা থেকে নড়িনি। সর্বশেষ দেওয়া প্রতিবেদনে আমি আবু সাঈদের শরীরে পিলেট ইনজুরির বর্ণনা দেই। তবে প্রতিবেদনে ‘গান শট’ শব্দটা লিখিনি’
এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন চিকিৎসক রাজিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী ও দুটি সন্তান আছে। ওই সরকার এখনেও ক্ষমতায় থাকলে এখন আমার কী হতো? আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সত্য প্রতিবেদন দিয়েছি। আমি আবু সাঈদ হত্যার নির্দেশদাতাসহ জড়িতদের বিচার ও শাস্তি চাই।’
দুই পুলিশকে গুলি করতে দেখেন রিনা মুর্মু
সাক্ষী রিনা মুর্মু শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, আমি রিনা মূর্মু, ধর্ম খ্রিস্টান। আমি সাঁওতাল বংশের লোক। আমি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সে অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী ছিলাম। ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি ছিল। সে উদ্দেশে ভিসি অফিসে যাওয়ার পথে মডার্ন মোড়ে পুলিশ বাধা দেয়। আমি মিছিলের প্রথম সারিতে ছিলাম। শেখ হাসিনা ছাত্র-ছাত্রীদের রাজাকারের নাতিপুতি বলার প্রতিবাদে ১৪ জুলাই রাতেই মেয়েদের হল থেকে আমিও মিছিল নিয়ে বের হই। ১৫ জুলাই বিকেল ৪টায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেটে প্রশাসনের লাগানো তালা ভেঙে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। একই স্থানে ছাত্রলীগও পাল্টা কর্মসূচি দেয়। এ সময় তাদের হাতে অস্ত্র ছিল। ওই দিন তাদের অস্ত্রের আঘাতে কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী আহত হন।
জবানবন্দিতে সাক্ষী রিনা মুর্মু বলেন, পরের দিন ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি দেয়। রংপুর জিলা স্কুলের সামনে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরাও মিছিল বের করে। সব মিছিল একত্রিত হয়ে পার্কের মোড় (বর্তমান আবু সাঈদ চত্বর) অবস্থান নেয়। সেখান থেকে তাদের মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১নং গেটে পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠি দিয়ে আমাকে পায়ে আঘাত করে। আমাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ একাধারে গুলি করে যাচ্ছিল। এ সময় আবু সাঈদ রাস্তার মাঝখানে এসে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়ায়। তখন দুজন পুলিশ আবু সাঈদকে লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি করে। আমি তাদের নাম জানতে পারি—আমির হোসেন ও সুজন চন্দ্র রায়। আমি নিজের চোখে পুলিশকে গুলি করতে দেখি। সেদিনের ঘটনায় আমি নিজেও আহত হয়েছিলাম।
জবানবন্দিতে রিনা মুর্মু আরও বলেন, আবু সাঈদকে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং তখনকার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দায় এড়াতে পারেন না। আমি তাদের বিচার চাই।
এনটিভির লাইভে ঘটনা দেখে বিশ্ববাসী
আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি এনটিভিতে সরাসরি (লাইভ) কাভার করেছিলেন এনটিভির রংপুরের সাংবাদিক এ. কে. এম মঈনুল হক।
জবানবন্দিতে এ. কে. এম মঈনুল হক বলেন, আমি পেশায় একজন সাংবাদিক। আমি ইন্টারন্যাশনাল টেলিভিশন চ্যানেল –এনটিভির সিনিয়র করেসপনডেন্ট হিসেবে রংপুরে কর্মরত আছি। ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বেলা ২টার আগে থেকে আমি ও আমার সহকর্মী ভিডিও জার্নালিস্ট আসাদুজ্জামান আরমান রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেটের সামনে পার্কের মোড় এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদল শিক্ষার্থী রংপুর প্রেসক্লাব এলাকা থেকে একটি মিছিল নিয়ে আমরা যেখানে অবস্থান করছিলাম সেখানে পৌঁছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেটের সামনে আগে থেকেই অবস্থান করছিল পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকরা। তারা শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাধা দেয়। পুলিশের আশপাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীকেও আমি দেখতে পাই।
মঈনুল হক তাঁর সাক্ষ্যে বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেটের সামনে একটি সমাবেশ করার চেষ্টা করে, দু-একজন কথা বলারও চেষ্টা করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে চায়। এ সময় পুলিশ এবং তাদের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা বাধা দেয়। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। আন্দোলনকারীরা পুলিশের লাঠিপেটা থেকে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করে, একইসঙ্গে স্লোগান দিয়ে জমায়েত ধরে রাখার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ, রাবার বুলেট ও শটগানের গুলিবর্ষণ শুরু করে। তখন বেলা ২টা পার হয়ে গেছে। এনটিভির দুপুর ২টার খবরও শুরু হয়ে গেছে। আমরা টিয়ার গ্যাসের শেল, গুলিবর্ষণসহ সেখানকার ভীতিকর অবস্থার ভিডিও ফুটেজ সরাসরি এনটিভিতে পাঠাই। সেই ভিডিও ফুটেজ দেখে এনটিভি কর্তৃপক্ষ আমাকে টিভিতে লাইভে যুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেন। দুপুর ২টা ১৩ মিনিটের দিকে আমার সহকর্মী ভিডিও জার্নালিস্ট আসাদুজ্জামান আরমানসহ আমি লাইভে যুক্ত হই।’
মঈনুল হক জবানবন্দিতে আরও বলেন, ‘সেখানকার সামগ্রিক পরিস্থিতি এনটিভির মাধ্যমে সারা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরি। লাইভে যুক্ত থাকা অবস্থায় বেলা ২টা ১৭ মিনিটের দিকে ১নং গেটের সামনে রোড ডিভাইডারের একটি ছোট কাটা অংশ দিয়ে কালো টিশার্ট ও কালো প্যান্ট পরা একজন যুবক রাস্তার ডিভাইডারের পাশে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে। এ সময় তিনি দু’দিকে দু’হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে পড়েন। সেখান থেকে মাত্র কয়েক গজের দূরত্বে ১নং গেটের সামনে অবস্থানরত পুলিশ সদস্য যারা আগে থেকে গুলি করছিলেন, তারা দু’দিকে দু’হাত প্রসারিত করা এই যুবককে লক্ষ্য করে গুলি করে। এনটিভিতে লাইভ সম্প্রচারে এই দৃশ্য দেখা যায়। পুলিশের গুলি এই যুবকের সামনের দিকে অর্থাৎ বুক ও পেটে বিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ওই যুবক কয়েক পা পিছিয়ে যান এবং বসে পড়েন। বসে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আবার দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিনি তার দেহের ভারসাম্য হারিয়ে রাস্তার ওপর লুটিয়ে পড়েন। এ সময় সহযোগী কয়েকজন যুবক তাকে তুলে পার্কের মোড়ের দিকে নিয়ে যান। এনটিভির লাইভে তাকে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য যতক্ষণ পর্যন্ত ক্যামেরায় আসছিল ততক্ষণ পর্যন্ত সম্প্রচার করা হয়। একই সঙ্গে যখন ওই যুবককে গুলি করা হয় ঠিক সে সময় ক্যামেরা প্যান (ঘুরিয়ে) করে ১নং গেটের সামন থেকে যে পুলিশরা গুলি করছিল তাদেরও এনটিভির লাইভে দেখানো হয়। ওই মুহূর্তের ঘটনাটি একমাত্র এনটিভি লাইভ সম্প্রচার করতে পেরেছিল।’
এনটিভির সাংবাদিক মঈনুল হক জবানবন্দিতে আরও বলেন, ‘এরপর আমরা আমাদের সহকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারি গুলিবিদ্ধ ওই যুবককে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পারি, গুলিবিদ্ধ ওই যুবক রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং তার নাম আবু সাঈদ। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আমরা জানতে পারি গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল-১ এ চলতি বছরের ৩ আগস্ট এ মামলার প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ২৮টি কার্যদিবসে মোট ৫৪ জনের সাক্ষ্য দেন। গত ৮ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য ও জেরা শেষ করা হয়। এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আবু সাঈদ হত্যাসহ পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। শুনানিকালে আসামি ও রাজসাক্ষী চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন আদালতে উপস্থিত থাকলেও অপর দুই আসামি বর্তমানে ভারতে পলাতক আছেন।

জাকের হোসেন