কুমিল্লায় আন্তজেলা ডাকাত দলের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার
কুমিল্লায় জেলা ডিবি পুলিশসহ চান্দিনা, লালমাই, লাকসাম ও সদর দক্ষিণ থানা পুলিশের সমন্বিত অভিযানে আন্তজেলা ডাকাত দলের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে রয়েছে চিহ্নিত ডাকাত ও ১১ মামলার আসামি মো. নয়ন। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন চান্দিনা এলাকার মো. রায়হান (২০), মো. শাহাদাত হোসেন (২৪), মো. নাছির (২৫) ও মো. সজীব রানা (২৮)। এছাড়া সজীবের বিরুদ্ধে ৫টি ও রায়হানের বিরুদ্ধে ১টি মামলা রয়েছে।
অভিযানে ডাকাতদের ব্যবহৃত দুটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন পিকআপ, দেশীয় অস্ত্র ও লাকসামে ডাকাতি হওয়া তিনটি গরু ও দুটি বাছুর উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক ডাকাতির ঘটনায় উদ্বেগ তৈরি হলে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় টহল বৃদ্ধি, অতিরিক্ত চেকপোস্ট স্থাপন ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ নভেম্বর ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়—চান্দিনা উপজেলার বরকরই নাথের বাড়ি এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অভিযান চালাতে গেলে নীল রঙের একটি পিকআপে থাকা কয়েকজন ডাকাত পালিয়ে গেলেও তিনজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ। অপরদিকে হলুদ রঙের অপর একটি পিকআপ পালিয়ে গেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের দুটি টিম লাকসাম, লালমাই ও সদর দক্ষিণ এলাকায় প্রায় দেড় ঘণ্টা ধাওয়া চালায়।
এ সময় ডাকাত নয়ন পিকআপটি উল্টো ঘুরিয়ে ডিবি সদস্যদের ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে সদর দক্ষিণ থানার ফিরিঙ্গিরহাট এলাকায় পিকআপটি আটক হলে নয়ন ও তার সহযোগী দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করে। প্রায় ৩০ মিনিট ধাওয়া শেষে নয়ন একটি পুকুরে লাফ দিলে পাঁচ জন ডিবি সদস্য পুকুরে নেমে তাকে আটক করে। তবে তার এক সহযোগী পালিয়ে যায়। পরে গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যে চান্দিনা, দেবিদ্বার ও দাউদকান্দি এলাকায় আরও অভিযান পরিচালিত হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা চলতি মাসে লাকসাম ও চান্দিনা এলাকায় সংঘটিত গরু ডাকাতির ঘটনাও স্বীকার করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ বলেন, গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে দুটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন পিকআপ, বোল্ট কাটার, টোটো রিভলবার, কাঠের বাটযুক্ত দুটি ছুরি, লোহার দুটি চাপাতি, একটি স্টিলের চাপাতি, একটি হেস্কো ব্লেড কাটার এবং ডাকাতি হওয়া তিনটি গরু ও দুটি বাছুর উদ্ধার করা হয়। জেলায় ডাকাতি দমন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা