প্রশাসনিক ক্যু করে কেউ কেউ ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে : জামায়াত আমির
প্রশাসনিক ক্যু করে কেউ কেউ ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে খুলনা মহানগরীর শিববাড়ী মোড়ের বাবরি চত্বরে জামায়াতে ইসলামীসহ আন্দোলনরত ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
শফিকুর রহমান বলেন, ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছেন। প্রশাসনিক ক্যু করার চেষ্টা করছেন। আগামী নির্বাচনে ছলে-বলে কৌশলে কেউ কেউ বিভিন্ন জায়গায় বসে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে।
শফিকুর রহমান আরও বলেন, কোনো দেশপ্রেমিক দল চাঁদাবাজ হয়ে ৫ তারিখের পর আবির্ভূত হয়নি। যারা আবির্ভূত হয়েছিলেন, দায় এবং দরদ নিয়ে তাদের সঙ্গে বসেছিলাম। এটি শহিদদের রক্তের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা, এটা বন্ধ করতে হবে। যদি বন্ধ করা না হয় বিপ্লবী জনগণ, তরুণ জনতা, কোলে বাচ্চা নিয়ে রাস্তায় নেমে আসা ওই মায়েরা আমাদেরকে ক্ষমা করবে না। বন্ধ করা হয়নি, চাঁদাবাজি অব্যাহত রয়েছে, দুর্নীতি অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশে এটা হবে না, এটা আমরা হতে দেব না ইনশাআল্লাহ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে একটি দলের পায়ের নিচে মাটি নাই, তাই তারাই ষড়যন্ত্র করছে। তারাই এখন বিভিন্ন মহলে ভোটের দিনক্ষণ পেছানোর জন্য চক্রান্ত করছে। আর কীভাবে গুন্ডামি সন্ত্রাসী করে চাঁদাবাজি করা যায় সেই চক্রান্ত করছে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশে দেখতে পারছি, বাংলাদেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত। ৭২ বাকশালপন্থি আর একভাগ ২০২৪ সালের বিপ্লবপন্থি শক্তি। রক্তের সাগর পেরিয়ে ২৪-এর জুলাই বিপ্লবের পর যেই ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত করা হয়েছে, সেই ফ্যাসিবাদ বাংলার মাটিতে আসবে না। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি কার্যকরে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। জুলাই সনদকে চূড়ান্ত আইনি ভিত্তি দিতে গণভোটের আয়োজন করতে হবে। একসঙ্গে তালগোল পাকিয়ে এই মাহাত্ম্যকে নষ্ট করবেন না। জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন করা হোক।
মামুনুল হক আরও বলেন, ব্যর্থ হলে ইন্টেরিম সরকার ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। কলঙ্ক নিয়ে আপনাদেরও বিদায় নিতে হবে। বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।
দুপুর ১২টায় অর্থসহ পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। অর্থসহ কুরআন তেলাওয়াত করেন ক্বারী ইকরামুল কবির। এ ছাড়াও প্রেরণা সাহিত্য সংসদ খুলনার পরিচালক নাজমুল কবীর ও নবদান সাংস্কৃতিক সংগঠনের সিনিয়র পরিচালক নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে তাদের সহশিল্পীরা ইসলামী গান পরিবেশন করেন।

মুহাম্মদ আবু তৈয়ব, খুলনা