গুমের মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ, নিরাপত্তা জোরদার
টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই সেল) গুম করে রাখার ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এ শুনানিকে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন—বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
মামলায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে—তাদের মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ মোট ১৭ জন। এদের মধ্যে সাতজনকে পলাতক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, আর বাকি ১০ জন সেনা সদস্য বর্তমানে গ্রেপ্তার অবস্থায় আছেন। তারা বিভিন্ন সময়ে র্যাবের সঙ্গে কর্মরত ছিলেন বলে মামলার নথিতে উল্লেখ রয়েছে।
এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা ১০ সেনা কর্মকর্তা হলেন—কর্নেল এ কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, লে. কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।
শেখ হাসিনার শাসনামলে গুম, খুনের মামলায় গত ২২ অক্টোবর অন্য মামলার তিন সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে এই ১০ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
শুনানিকে ঘিরে গ্রেপ্তার ১০ সেনা সদস্যকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার বিষয়ে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গুমের একটি অভিযোগের (টিএফআই) ঘটনায় আসামি শেখ হাসিনা ও তারেক সিদ্দিকীসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।
অন্যটিতে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) গুমের ঘটনায় আসামি শেখ হাসিনা ও তারিক সিদ্দিকীসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। এই ৩০ জনের মধ্যে হাসিনা ও তারিক সিদ্দিকী দুটি মামলাতেই আসামি। ফলে আসামি সংখ্যা দাঁড়ায় ২৮ জনে। এদের মধ্যে ১৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন, বাকিরা পলাতক।
এ ছাড়া জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) আটক রেখে নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের হওয়া আরেকটি মামলায় ১৩ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আগামী রোববার ধার্য রয়েছে।
এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর গত ১১ অক্টোবর সেনাবাহিনী এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়—তাদের ১৫ কর্মরত কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক