শীতের তীব্রতায় পঞ্চগড়ে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি
হিমালয়কন্যা খ্যাত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে পাহাড়ি হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, ভোরবেলা গরম পোশাক পরে স্কুলে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। কৃষাণ-কৃষাণিরাও মাঠে ছুটছেন কাঁপতে কাঁপতে। এছাড়াও দিনমজুর, শ্রমিকরাও বেরিয়ে পড়ছেন জীবিকার খোঁজে।
গতকাল মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এ জেলায় বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ বুধবার এই তাপমাত্রা উঠে এসেছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। এছাড়া চলতি মাসেই এ অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দিনের বেশিরভাগ সময় কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকায় সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে পড়ে না, ফলে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয় না। এজন্য দিনেও হালকা শীত অনুভূত হয়। এ তথ্য জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায়।
জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় কৃষক ইয়াসিন আলি জানান, শীতের প্রভাবে সকালে ও রাতে কিছুটা কষ্ট হলেও কৃষিকাজ বা অন্যান্য কাজে তেমন অসুবিধা হচ্ছে না, কারণ দিনের বেলায় সূর্যের তাপ ভালো থাকে।
এদিকে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত শীত বেশি অনুভূত হওয়ায় শিশু ও বৃদ্ধদের মাঝে দেখা যাচ্ছে নিউমোনিয়া ও এজমার প্রভাব। স্থানীয় জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। এছাড়া ধূমপায়ীরাও ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে এসব রোগব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে গরম পোশাক ব্যবহার ও ধূমপান থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন ধর। এছাড়া কোনো স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিলে নিকটস্থ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অথবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে সেবা গ্রহণের পরামর্শও দেন তিনি।
অপরদিকে শীতের তীব্রতায় বিভিন্ন কৃষি উৎপাদনে কেমন প্রভাব পড়ছে জানতে চাইলে দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাঈম মোর্শেদ জানান, শীতের কারণে এখন পর্যন্ত কৃষি খাতে কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে শৈত্যপ্রবাহ হলে আগাম বোরো ধানের বীজতলায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

হাসান রায়হান, পঞ্চগড় (দেবীগঞ্জ)