মানিকগঞ্জের পথে পথে নির্বাচনি প্রচারণায় বিএনপির প্রার্থী আফরোজা খান রিতা
মানিকগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রাম, শহর, চর—যেখানেই যান, মানুষের কণ্ঠে একটা নাম বেশি শোনা যায়—আফরোজা খান রিতা। তিনি শুধু মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নন, তিনি মানুষের আশা, ভরসা আর সংকটকালের আশ্রয়।
একজন স্বনামধন্য শিল্পপতির পরিবারে জন্ম হলেও আফরোজা খান রিতার জীবন আজ সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাবা ছিলেন দেশের অন্যতম দানবীর ও সাবেক মন্ত্রী হারুনার রশিদ খান মুন্নু। ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের উত্তরসূরি হওয়ার সব যোগ্যতা থাকলেও বাবার অসমাপ্ত রাজনৈতিক স্বপ্নকে পূরণ করতে রিতা বেছে নিয়েছেন মানুষকে পথ দেখানোর কাজ।
মানিকগঞ্জের গ্রামের সরু পথ ধরে বাড়ি বাড়ি গেলে দেখা যায় রিতার হাত ধরে কোনো বৃদ্ধা কাঁদছেন, কোনো গৃহবধূ তার কষ্টের কথা বলছেন, শিশুরা তাকে ঘিরে ধরছে মমতাময়ী মায়ের মতো আদরের আশায়। রিতা কখনো দরিদ্র মায়ের হাত শক্ত করে ধরছেন, কখনো শিশুদের সাথে বসে গল্প করছেন, আবার কখনো কোনো হতদরিদ্র নারী তাকে জড়িয়ে ধরে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি বাবার ব্যবসায় যোগ দেন। কিন্তু বাবার মতোই মানুষের প্রতি টান, জেলার মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ তাঁকে টেনে আনে রাজনীতির মাঠে। বিএনপি সরকারের সময় বাবার হাত ধরেই রাজনীতিতে প্রবেশ তার। আজ তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও মানিকগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী।
২০২৫ সালের জুনে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই নতুন প্রাণ ফিরেছে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপিতে। মানিকগঞ্জের মানুষ তাঁকে ‘মমতাময়ী’ বলে ডাকেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাজনৈতিক মামলা, গ্রেপ্তার আর দমনের মধ্যে অনেক জেলায় বিএনপির কার্যক্রম ভেঙে পড়লেও মানিকগঞ্জ ছিল ব্যতিক্রম। জেলার বহু প্রবীণ নেতা বলছেন রিতা না থাকলে মানিকগঞ্জে বিএনপি টিকে থাকত না। তিনি কারাবন্দি নেতাকর্মীদের পরিবারকে খাদ্য, অর্থ ও নিরাপত্তা দিয়েছেন। মামলা-হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থেকেছেন, তাদের সন্তানদের পড়াশোনা ও চিকিৎসায় সহায়তা করেছেন। তিনি শুধু রাজনৈতিক নেতা নন একজন দুঃসময়ের অভিভাবক।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাঠে দ্বারে দ্বারে ছুটছেন আফরোজা খান রিতা। শুনছেন মানুষের কথা। বিএনপি তাকে মানিকগঞ্জ-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এরপর থেকেই দিন-রাত এক করে তিনি ছুটছেন। কখনো নদীর চরে, কখনো শহরের অলিগলিতে, কখনো জনসমাবেশে, কখনো নারীদের উঠোনে বসে কথা বলছেন। নারী ভোটারদের উদ্দেশে তার আহ্বান ‘আমরা নারীরা পারি দেশ বদলে দিতে। ভোটে আপনাদের সিদ্ধান্তই আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে।’ নারীরা তাই তাকে ঘিরে ধরে, সেলফি তোলে, কেউ কেউ আবেগে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে।
রিতার বিশ্বাস সরকারি সহযোগিতা ছাড়া জেলার উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন ‘মানিকগঞ্জকে বাঁচাতে চাইলে পরিবর্তনের সরকার দরকার।’

আহমেদ সাব্বির সোহেল, মানিকগঞ্জ