হাদিকে গুলিকারী আদাবর ছাত্রলীগের নেতা ফয়সাল, দাবি ফাহিম ফারুকীর
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান বলে দাবি করেছেন মঞ্চ ২৪ এর আহ্বায়ক ফাহিম ফারুকী। আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ দাবি করেন তিনি।
ফাহিম ফারুকী বলেন, শরিফ ওসমান হাদি ভাই বর্তমানে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন এবং রক্ত গ্রহণ করছেন, যা তার স্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক। আমরা আশাবাদী, তাকে অতি দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য ভালো কোনো জায়গায় নেওয়া হবে। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।
আরও পড়ুন : হাদির অবস্থা সংকটাপন্ন, ব্রেন স্টেম ক্ষতিগ্রস্ত : ডা. সায়েদুর রহমান
ফাহিম ফারুকী দেশের ছাত্র-জনতাকে আল্লাহর কাছে দোয়া করার অনুরোধ জানান, যেন জুলাইয়ের বীর শরিফ ওসমান হাদি ফিরে আসতে পারেন।
মঞ্চ ২৪ এর আহ্বায়ক ফাহিম ফারুকী বলেন, গুপ্ত সুপ্ত কোনো কথা নেই। কথা হচ্ছে আওয়ামী লীগ ঢুকেছে। তারা দুই সপ্তাহ ধরে নির্বাচনি প্রচারণার টিমের সঙ্গে জড়িত ছিল। তারা বাংলামোটরে অবস্থিত (ইনকিলাব) সেন্টারে আসত। সেখানে সবার জন্য বসার সুযোগ আছে। সেখানে তাদেরকে একবার মাস্ক খুলতে বলা হলে তাদের একজন ‘সমস্যা আছে’ বলে এড়িয়ে যায়। শরিফ ওসমান হাদি ভাই খুবই উদার মনের, সেজন্য তিনি তাদের সন্দেহ না করে নির্বাচনি প্রচারণার টিমে নিয়েছিল।
ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে ফাহিম ফারুকী বলেন, জুমার নামাজের পূর্বেও তারা শরিফ ওসমান হাদি ভাইয়ের সঙ্গে ছিল। শরিফ ওসমান হাদি যখন জুমার নামাজে প্রবেশ করে সেই দুজন ব্যক্তি, অর্থাৎ যিনি কিলিং করেছেন এবং যিনি বাইক চালিয়েছেন তারা বাইরে অপেক্ষা করছিলেন, শরিফ ওসমান হাদির গতিবিধি লক্ষ্য করার জন্য। শরিফ ওসমান হাদি যখন নামাজ থেকে বের হন, তারপর তারা উনার পিছু নেয়। শরিফ ওসমান হাদির ওপর আক্রমণ হওয়ার পর থেকে সেই দুজনকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
আহ্বায়ক ফাহিম ফারুকী স্পষ্ট জানান, হামলাকারীরা তার (হাদি) টিমে ঢুকেছিল, নির্বাচনি জনসংযোগে অংশগ্রহণ করেছিল এবং তাদের পরিচয় তারা ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিল আদাবর থানার ছাত্রলীগের নেতা ফয়সাল।
আরও পড়ুন : হাদির দুবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ও প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে : চিকিৎসক
ফাহিম ফারুকী উল্লেখ করেন, এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে পূর্বে থেকেই সরকারকে অবগত করা হয়েছিল, কিন্তু সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সেজন্য অন্তর্বর্তী সরকার এই দায় এড়াতে পারে না।
ফাহিম ফারুকী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগ এই মিশনের অংশ হিসেবে শুধু শরিফ উসমান হাদিকে নয়, জুলাইয়ের শক্তিগুলোকে ধ্বংস করার জন্য ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উল্লেখ করে তিনি রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা দাবি করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ফাহিম ফারুকী আরও বলেন, অনুপ্রবেশ রোধে তারা সতর্ক থাকবেন। এখন থেকে রাজনৈতিক পরিচয়, জুলাইয়ে অবদান ও ব্যক্তিগত পরিচয় সম্পূর্ণরূপে প্রমাণ ছাড়া কাউকে দলের অংশ করা হবে না। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও অনুরোধ করেন, যেন কাউকে ব্যানার বা পোস্টার ধরিয়ে দেওয়ার আগে তাদের পরিচয় ও রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড নিশ্চিত করা হয়।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক