বাস ধর্মঘট, কুমিল্লায় ভোগান্তিতে যাত্রীরা
কুমিল্লায় দুই পরিবহণ সংস্থা বোগদাদ ও আইদি সার্ভিসের দ্বন্দ্বে নগরীর তিনটি বাস টার্মিনাল থেকে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নগরীর জাঙ্গালিয়া, শাসনগাছা ও চকবাজার বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। এর ফলে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার প্রায় ৪০টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার যাত্রী।
পরিবহণ নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, জাঙ্গালিয়া বাস টার্মিনাল থেকে কুমিল্লা-চাঁদপুর সড়কে আইদি পরিবহণের বাস চলাচল বন্ধের দাবিতে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাস মালিক সমিতি। মূলত ২০২৩ সালে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আইদি পরিবহণ চলাচল শুরু করার পর থেকেই এই বিরোধের সূত্রপাত। আইদি পরিবহণের চেয়ারম্যান মীর পারভেজ আলম অভিযোগ করেন, চাঁদপুর থেকে অনুমতি থাকলেও কুমিল্লার একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট তাদের চলাচলে বাধা দিচ্ছে। কুমিল্লা জেলা প্রশাসন থেকে অনাপত্তিপত্র না পাওয়ায় গত ফেব্রুয়ারি থেকে তারা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড থেকে সার্ভিস পরিচালনা করে আসছিলেন।
অন্যদিকে কুমিল্লা বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘আইদি পরিবহণ চাঁদপুর থেকে পারমিট পেলেও কুমিল্লা থেকে কোনো রুট পারমিট পায়নি। তবুও তারা জোর করে টার্মিনাল ব্যবহার করতে চাচ্ছে।’ তিনি জানান, বুধবার ও বৃহস্পতিবারও জোরপূর্বক বাস টার্মিনালে আনার চেষ্টা করা হলে শৃঙ্খলা রক্ষায় তারা তিনটি টার্মিনাল থেকেই বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন।
হঠাৎ শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম জানান, সকালে জাঙ্গালিয়া এসে বাস না পেয়ে ১০০ টাকা বেশি ভাড়ায় বিকল্প পথে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন। আবদুল হাই নামের অন্য এক যাত্রী জানান, পরিবহণ ধর্মঘটের কারণে আজ তাঁর বাড়ি ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সাহেবের সঙ্গে বসেছিলেন। আমরা দ্রুত সমস্যা সমাধানে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা