এক মাসে সড়কে ঝরল ৪৮৩ প্রাণ
সারাদেশে গত এক মাসে ৫৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৩ জন নিহত এবং ১৩১৭ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ৬৪ জন (১৩.২৫%) এবং শিশু ৭১ জন (১৪.৬৯%)।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একই সময়ে ৬টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া ৪৭টি রেল দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছেন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২২৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৯৪ জন নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ৪০.১৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪২.৫০ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১০৬ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২১.৯৪ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৭ জন, যা মোট নিহতের ১১.৮০ শতাংশ। যানবাহনভিত্তিক নিহতের তথ্যে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৯৪ জন, বাসের যাত্রী ২৪ জন, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-মিকচার মেশিন আরোহী ২২ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস আরোহী ১৪ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ৮৩ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-টমটম-মাহিন্দ্র) ৩১ জন এবং রিকশা-বাইসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন ৯ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৩১টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৪৫টি আঞ্চলিক সড়কে, ৮২টি গ্রামীণ সড়কে, ৭১টি শহরের সড়কে এবং ৫টি অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাসমূহের ধরন বিচারে ১২২টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৩৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৯টি পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়া, ৫৯টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৭টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা (২৬.৪০%) ও প্রাণহানি (২৪.৬৩%) ঘটেছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৪১টি দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছেন। চট্টগ্রাম বিভাগে ২০.৯৭% দুর্ঘটনা ও ২২.৯৮% প্রাণহানি, রাজশাহী বিভাগে ১৬.১০% দুর্ঘটনা ও ১৪.০৭% প্রাণহানি এবং খুলনা বিভাগে ১২.১৭% দুর্ঘটনা ও ১৪.৪৯% প্রাণহানি ঘটেছে। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৩০টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি ৪১টি দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে শেরপুর ও পঞ্চগড় জেলায় সবচেয়ে কম, ৯টি দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে- ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএ-এর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

নিজস্ব প্রতিবেদক