সুদানে নিহত সৈনিক মমিনুলকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে প্রাণ হারিয়েছেন কুড়িগ্রামের দুই বীর সেনা সদস্য। তাদের একজন উলিপুর উপজেলার শহীদ সৈনিক মমিনুল ইসলামের (৩৮) মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে জানাজার নামাজ শেষে চিরনিদ্রায় শায়িত হন এই শান্তিরক্ষী।
এর আগে আজ দুপুর আড়াইটার দিকে হেলিকপ্টারে করে মমিনুল ইসলামের মরদেহ কুড়িগ্রাম পৌঁছায়। লাশবাহী হেলিকপ্টারটি জেলার উলিপুর উপজেলা হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। পরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে তার মরদেহ নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। তার বাড়ি উপজেলার পাণ্ডুল ইউনিয়নের পারুলেরপাড় গ্রামে। তিনি এই গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে।
বিকেল সাড়ে ৩টা জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় তার বাবা, ছোট ভাই, নিকটাত্মীয় ও গ্রামবাসীর পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিরা অংশ নেন। এর আগে সেনাবাহিনীর একটি প্রতিনিধিদল গার্ড অব অনার দেয়।
শহীদ এই শান্তিরক্ষী মা-বাবা ও ভাই ছাড়াও স্ত্রী ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন। তার বড় মেয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী এবং ছোট মেয়ের বয়স চার বছর। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ৩৩ দিন আগে শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি সুদানে গিয়েছিলেন।
নিহত মমিনুলের বাবা আব্দুল করিম বলেন, ‘আমার ছেলে অনেক ভালো মানুষ ছিল। এলাকার সবাই তাকে ভালোবাসে। আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন বলেই হয়তো তার শহীদি মৃত্যু হয়েছে। তার জন্য সবাই দোয়া করবেন।’
নিজেদের অসহায়ত্ব তুলে ধরে আব্দুল করিম আরও বলেন, ‘মমিনুল আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জন করা মানুষ ছিল। তার মৃত্যুতে আমরা অসহায় হয়ে পড়লাম। সরকার যদি আমার ছোট ছেলের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে পরিবারটা ভালোভাবে চলতে পারত।’
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে গত ১৩ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় আনুমানিক দুপুর ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী ড্রোন হামলা চালায়। হামলায় দায়িত্বরত ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী শহীদ হন এবং আটজন আহত হন।

তানভীরুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম (চিলমারী- উলিপুর)