গাড়ির নিচে দীর্ঘপথ টেনে নেওয়ায় নারীর মৃত্যু : উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি
গাড়ির নিচে পড়া রুবিনা আক্তারকে শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি হয়ে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত টেনে নেওয়ার ঘটনায় মারা যান তিনি। এতে ঢাবি ক্যাম্পাসের সড়ক অনিরাপদ ভাবছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আজ শুক্রবার রাতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। এর আগে ঢাবি ক্যাম্পাসে রুবিনা আক্তার নামে এক নারীকে চাপা দেন ঢাবিরই বহিষ্কৃত শিক্ষক মোহাম্মদ আজহার জাফর শাহ। রুবিনা আটকা পড়েন ওই প্রাইভেটকারের নিচে। ওই অবস্থায় শাহবাগ থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত ওই রুবিনাকে টেনে নিয়ে যান।
পরে নীলক্ষেতের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ থেকে পলাশীর দিকে সড়কের মুখে চালক জাফরকে আটকায় পথচারীরা। কারের নিচ থেকে জীবিত উদ্ধার করেরুবিনাকে। এরপর তাঁকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। সেখানে নেওয়ার পর মারা যান ওই তিনি।
এই ঘটনায় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের বাসভবনের মূলফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের দাবি—নিরাপদ ক্যাম্পাস।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ ইমী বলেন, ‘একজন নারীকে প্রায় দেড় কিলোমিটার গাড়ির নিচে করে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়তই দেশে এ রকম মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। দল-মত নির্বিশেষে তাই নিরাপদ সড়ক আমাদের সবার দাবি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে এরকম ঘটনার প্রতিকার চাই। আমরা অবিলম্বে ক্যাম্পাসে যানচলাচল সীমাবদ্ধ করার জোর দাবি জানাই।'
আরেক শিক্ষার্থী সুহাইল আহমেদ শুভ বলেন, ‘ক্যাম্পাসে যে সার্বিকভাবে নিরাপত্তার অভাব, আজকের ঘটনায় সেটি প্রমাণিত হলো। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল—ক্যাম্পাসে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখা। কিন্তু প্রশাসনকে এ নিয়ে কোনো জোরাল ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। যার ফলশ্রুতিতে আজকের এই ঘটনা ঘটেছে।’আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরমানুল হক বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব শিক্ষার্থীর জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। কিন্তু, তারা এ দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ক্যাম্পাসে প্রতিনিয়তই উচ্চস্বরে এবং উচ্চগতিতে যানবাহন চলছে। এতে একদিকে শব্দদূষণ হচ্ছে। অন্যদিকে, আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। আজকের এই মৃত্যুর দায় ভিসি-প্রক্টরকে নিতে হবে।’