রাবিতে ছাত্রলীগের একাংশের বিক্ষোভ অব্যাহত, ক্যাম্পাসে আসেননি নতুন সভাপতি-সম্পাদক
দীর্ঘ সাত বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রলীগের কমিটি করা হলেও বিষয়টি নিয়ে এখনও উত্তপ্ত গোটা ক্যাম্পাস। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই বিক্ষোভ করে আসছিল পদবঞ্চিত ও কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়ারা, যা অব্যাহত রয়েছে। নতুন কমিটি বিলুপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।
এদিকে, কমিটি ঘোষণার পরেও রাবি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারেনি ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তারা ক্যাম্পাসে কবে আসবেন সে বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তারা ফোন ধরেননি।
এর আগে, গত শনিবার রাতে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুকে সভাপতি ও আসাদুল্লা-হিল-গালিবকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে নতুন কমিটিকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে ছাত্রলীগের একাংশ। পরদিন সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে ছাত্রলীগের দলীয় টেন্টে অবস্থান নেয় তারা।
দফায় দফায় বিক্ষোভ ও শোডাউন দিয়ে নতুন নেতৃত্বকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় ছাত্রলীগের একাংশ। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলে সদ্য ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর করেন তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ মার্কেটে বর্তমান সভাপতির অনুসারীকে মারধর করে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত অবস্থানের পর আজ সোমবার (২৩ অক্টোবর) দ্বিতীয় দিনের মতো দলীয় টেন্টে অবস্থান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাস দখলে নেয় তারা।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গঠনতন্ত্র না মেনে বিবাহিত ও অছাত্রদের কমিটিতে পদ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ছাত্রলীগে নিষ্ক্রিয় থাকা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুকে সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপআউট ও সনদ জালিয়াতি করে সন্ধ্যাকোর্সে ভর্তি হওয়া আসাদুল্লা-হিল-গালিবকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচি বিষয়ে নতুন কমিটির সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম সরকার ডন বলেন, ‘দ্বিতীয় দিনের মতো ক্যাম্পাসে আমরা অবস্থান করছি। এ কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি না দেওয়া পর্যন্ত আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করব। নতুন কমিটির কোনো নেতাকর্মীকে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হবে না।’
বর্তমান কমিটিকে বিলুপ্ত করে নতুন স্বচ্ছ ইমেজের ছাত্র নেতাদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানান কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া তাওহিদুল ইসলাম দুর্জয়। নতুন কমিটিতে সহসভাপতির পদ পাওয়া এই ছাত্রলীগনেতা বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সঠিক নেতৃত্ব ধরে রাখতে ছাত্রলীগের স্বচ্ছ ইমেজের নেতৃত্ব প্রয়োজন। সে লক্ষ্যেই আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করে নিয়েছি যাতে করে অবাঞ্ছিত নেতৃত্ব ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারে। এই কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি না দেওয়া পর্যন্ত আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান অব্যাহত রাখব।’
বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কি না জানতে চাইলে দুর্জয় বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতারা তাদের অপকর্মগুলোর খবর জানেন না। হয়তো গোপন রেখেছিল তারা। আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণিত অপকর্মগুলো তুলে ধরেছি। এখন তাদের নতুন সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করছি।’