পহেলা বৈশাখ নিয়ে আসিফের আবেগঘন স্ট্যাটাস
রাত পোহালেই পহেলা বৈশাখ। ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। প্রতি বছর দিনটি বিশেষভাবে উদযাপন করে থাকেন বাঙালিরা। এবার পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে শৈশবের নানা স্মৃতিচারণ করেছেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী আসিফ আকবর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দিয়েছেন আবেগঘন স্ট্যাটাস।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে আসিফ আকবর লেখেন, ‘তখন ফেসবুক ছিল না, পান্তা ইলিশের ফটকা ঐতিহ্যও ছিল না। পয়লা বৈশাখের আনন্দ ছিল, উৎসব ছিল। সকাল সকাল কুমিল্লা টাউন হল মাঠে গিয়ে হরেক রকম খেলনা কেনা এবং খেলা, নাগরদোলায় চড়ে মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের অনুভূতি নেওয়া ছিল মহা উত্তেজনার বিষয়। আব্বাকে দেখতাম টাউন হলে মাছের বাজারে ঢুকে হাঁটাহাঁটি করতে। পরে দামে সুবিধা করতে না পেরে রাজগঞ্জ বাজার থেকে সিলভার কার্প কিনে বড় বড় মাছের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতেন। বড় রুই-কাতল মাছ শুধু দেখেই যেতাম। তিলের খাজা মুরালি কটকটি জিলাপিসহ টকটকে লাল তরমুজের টুকরার আকর্ষণ ছিল অমোঘ। রাতের বেলায় দীপক দা অথবা লিপটন শাউ’র বাসায় মুড়িঘণ্টসহ নানান পদের সবজি আর বড় কাতল মাছের দো-পেঁয়াজা ছিল অমৃত।’
অসাম্প্রদায়িক এ উৎসবের কথা উল্লেখ করে আসিফ লেখেন, ‘পাড়া-মহল্লাজুড়ে ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ ছিল। ছিল না কোনও জাতপাত ও ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ। কুমিল্লা পৌর উদ্যানের জামতলায় বর্ষবরণ উৎসবে গান-কবিতা-অভিনয় নিয়ে আমাদের শৈশবের শত আবেগ। সবাই সমস্বরে গাইতাম—এসো হে বৈশাখ, এসো এসো।’
এই কণ্ঠশিল্পী আরও লেখেন, ‘তপ্ত দুপুরে পুকুরে মাছ ধরা আর ডুবাডুবি খেলার আনন্দ ভুলতে পারি না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার এক অদ্ভূত প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত থাকত সবাই। নতুন বছরের পরিকল্পনা আর ছেলেমানুষি হাজারও আনন্দ এখনও শুদ্ধ অতীতে নিয়ে যায়।’
আসিফ আকবর লেখেন, ‘ফেসবুক আসার পরে পহেলা বৈশাখ নিয়ে শুরু হওয়া বিষাক্ত বিভক্ত খেলা আমার রঙিন শৈশবকে হত্যা করতে পারেনি। এখন খুব একটা উদযাপন করতে পারি না, কিংবা করা হয়ে ওঠে না। অতীতের মধুময় স্মৃতিগুলো রোমন্থন করেই বাঁচতে বেশ ভালো লাগে।’
আসিফ আরও লেখেন, ‘পহেলা বৈশাখ আমাদের বাংলা বর্ষবরণ মহোৎসবের দিন। সারা বিশ্বের সব জাতিই তাদের নিজস্ব বর্ষবরণে আনন্দ করে থাকে। আমরাও করেছি এবং করে যাব। যদিও পহেলা বৈশাখ চলে গেলেই আবার ইংরেজি বছরের হিসেবে ঢুকে পড়ি, তবুও সব্বাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা।’