শুভ্র রঙিন মেরিলিন মনরো
মেরিলিন মনরো এক দমকা হাওয়া। ১৯৪০-এর দশকে যে বেগে তিনি পুরুষদের হৃদয়ে আঘাত হেনেছেন, এখনো তেমনই শক্তিশালী। মনরো এমনই এক ঝড়, যা কখনো দুর্বল হয় না। লাল লিপস্টিককে মনরো পরিণত করেছিলেন নিজস্ব সম্পত্তিতে। কলজে কাঁপানো হাসি, সোনালি চুল এবং শরীরী আবেদন মনরোকে করে তুলেছে রুপালি দুনিয়ার রানী।
১৯২৯ সালের ১ জুন জন্মেছিলেন নোমা জিন মর্টেনসন। মডেলিংয়ে নাম লেখান মেরিলিন মনরো নামে। ছবিতে প্রথম ব্রেক পান ১৯৪৬ সালে। থিয়েটার, টেলিভিশন, ফিল্ম এবং মিউজিক মনরোর ‘বিউটি উইথ ব্রেইন’ কম্বো কাজ করেছে সব জায়গায় সমান দক্ষতায়। জীবিত অবস্থায় নিজেকে রহস্যমানবীতে পরিণত করছিলেন মনরো। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ১৯৬২ সালে মারা যান তিনি। তাঁর কাজ যেমন এখনো তাক লাগায়, তেমনি তাঁর বর্ণাঢ্য জীবন ও ক্যারিয়ার আজো অনেক নায়িকার কাছে ঈর্ষণীয়।
মেরিলিন মনরো তাঁর জীবনে অনেক রহস্য, উন্মাদনা ও প্রশ্ন তৈরি করেছিলেন। কিন্তু মেকআপের বাইরেও মনরোর একটা চেহারা ছিল। পর্দার বাইরে ছিল একটা বাস্তবতা। সেখান থেকেই তুলে ধরা হলো কিছু তথ্য :
১. বহু তরুণের হৃদয়ের রানী মনরো, হীরা তেমন একটা পছন্দ করতেন না। যদিও এই মনরোই গেয়েছিলেন, ডায়মন্ডস আর আ গার্লস বেস্ট ফ্রেন্ড! মনরোর গয়নার বাক্স ছিল খুবই সাধারণ। তাঁর দ্বিতীয় স্বামী জো ডিম্যাগিও অবশ্য তাঁকে বেশ কিছু হীরা ও মুক্তার গয়না বানিয়ে দিয়েছিলেন।
২. মনরোর থুতনিতে কয়েকটি চুল ছিল। সেটা তাঁর সৌন্দর্যে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারত। কিন্তু তিনি তা রেখে দিয়েছিলেন। বলা হয়ে থাকে, হালকা সোনালি লোমের কারণে মনরোর মুখে আলো পড়লে ক্যামেরায় নাকি তা অদ্ভুত স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে দিত।
৩. মনরো শৈশবে তোতলাতেন। শোবিজে নামার আগে অবশ্য সে সমস্যা কাটিয়ে উঠেছিলেন তিনি।
৪. মনরোর গায়ের পোশাক এখন কোটি টাকায় নিলামে বিকোয়। আঁটসাঁট পোশাক পরা ছিল মনরোর স্টাইল। ১৯৯৯ সালে জন এফ কেনেডির জন্মদিনে যে পোশাক পরে হ্যাপি বার্থডে গেয়েছিলেন মনরো, তা বিক্রি হয়েছে আট কোটি টাকায়। ‘দ্য সেভেন ইয়ার ইচ’ ছবিতে মনরো পরিহিত শুভ্র পোশাকটি ২০১১ সালে সাড়ে চার কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে।
৫. নিজের সময়ের সেরা হলেও কখনো অস্কার পাননি মনরো। পুরস্কার তো দূরে থাক, কখনো মনোনয়নও পাননি তিনি। ‘সাম লাইক ইট হট’ ছবির সুগার কেন চরিত্রের জন্য অবশ্য গোল্ডেন গ্লোব জিতেছিলেন তিনি।
৬. প্লেবয় ম্যাগাজিনে মনরোর বেশ কিছু বিবসনা ছবি ছাপা হয়েছিল। ছবিগুলো আসলে ক্যালেন্ডারে ছাপানোর জন্য তোলা হয়েছিল। ফটোগ্রাফার টম কেলি ১৯৪৯ সালে ছবিগুলো তুলেছিলেন। প্রতি ছবির জন্য মাত্র ৫০ ডলার পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন মনরো।
৭. স্বামী জোয়ের কাছে মৃত্যুর পর নিজের কবরে প্রতি সপ্তাহে ফুল পৌঁছে দেওয়ার আবদার করেছিলেন মনরো। তাঁর মৃত্যুর ২০ বছর পর পর্যন্ত সে কথা রেখেছিলেন জো। প্রতি সপ্তাহে তিনবার মনরোর সমাধিতে ফুল দিয়েছেন তিনি।
৮. মেরিলিন মনরো প্লাস্টিক সার্জারি করিয়েছিলেন। সেই অস্ত্রোপচারের মেডিকেল রিপোর্ট নিলামে বিক্রি হয়েছে সাড়ে ২০ লাখ টাকায়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, থুতনি এবং নাকে প্লাস্টিক সার্জারি করিয়েছিলেন তিনি।
৯. তিনবার বিয়ে করেছিলেন মনরো। প্রথমটি মাত্র ১৬ বছর বয়সে, তার চেয়ে পাঁচ বছরের বড় জেমস ডগহার্টিকে। এর পর ১৯৫৪ সালে বেজবল তারকা জো ডিমাগিয়ো এবং ১৯৫৬ সালে লেখক ও চিত্রনাট্যকার আর্থার মিলারকে বিয়ে করেছিলেন মনরো।
১০. মনরোর শৈশব কেটেছে অনাথ আশ্রমে। তাঁর মা গ্ল্যাডিস নিজ সন্তানের দায়িত্ব নিতে না পারায় আলাদাভাবে ১১ জন দম্পতির কাছেই কেটেছে মনরোর শৈশব-কৈশোর।