শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চস্থ ‘নয়ন তারা’
সামাজিক মূল্যবোধ ও বাল্যবিবাহের ওপর ভিত্তি করে মঞ্চ নাটক ‘নয়ন তারা’। নাটকটি রচনা করেছেন প্রকাশ সরকার সুমন এবং নির্দেশনায় ছিলেন নূর হোসেন রানা।
নাটকটি আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় নাট্যশালা ভবনের স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয়। নাটকটি প্রযোজনা করেছে জেনেসিস থিয়েটার।
নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রকাশ সরকার মামুন, ইনায়েত হোসেন হিরু, রাজ রিয়াজ, আনসার আলী, চন্দনা সরকার, আফরোজা, কবি, ইকবাল, সমুদ্র প্রমুখ।
নাটকটি প্রসঙ্গে নির্দেশক নূর হোসেন রানা বলেন, ‘নাটকটির মধ্য দিয়ে সব সপ্ন-পিপাসু মানুষের কথা বলা হয়েছে। প্রতিফলিত হয়েছে তাদের হাসি-আনন্দ, দু:খ-কষ্ট, জীবনের আশা-আকাঙ্খার কথা। এতে নবীন-প্রবীনদের সমন্বিত অভিনয় রয়েছে।’
‘নয়ন তারা’নাটকে দেখা যায়, “বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এ প্রবহমান নদীর দুই তীরে অসংখ্য সরল-সাধারন মানুষের বসবাস । নৌকা বেয়ে, মাছ ধরে ও কৃষি কাজ করে জীবন-জীবিকা এসব মানুষদের। মূলত এ সকল মানুষের জীবন চিত্র নিয়েই ‘নয়ন তারা’ নাটকটি রচনা করা হয়েছে। আর এই নাটকে স্থান পেয়েছে বাল্যবিবাহ, মৎস্য নিধন, শিক্ষা ও প্রেম ভালোবাসার বিষয়। নদীর তীরে বসবাসকারী একজন মানুষ নাম তার পরান । নৌকা বেয়ে জীবন জীবিকা তার। সবাই তাকে পরান মাঝি বলে চিনে এবং জানে। এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার। মেয়ে ময়না এবং ছেলে মোহন গ্রামের একটি স্কুলে লেখাপড়া করে। মেয়েটির বয়স ১৩ বছর। দেখতে খুব সুন্দরী। একসময়ে পাশের গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ হাসেম আলী একমাত্র পুত্র নয়নের সাথে তার বিয়ের প্রস্তাব আসে। তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই ভালো এবং নয়ন ছেলে হিসেবে খুবই ভালো। তাই পরান মাঝি তার মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ করে অল্প বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি হয়। এদিকে তার স্ত্রী আমেনা এ বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হলে উভয়ের মধ্যে বাক-বিতন্ড সৃষ্টি হয়। তথাপিও পরান তার মেয়েকে বিয়ে দিতে দিন তারিখ ঠিক করে ফেলে। এদিকে গ্রামের স্কুল মাষ্টার খবর পেয়ে পরানের বাড়িতে যায় এবং তাকে বুঝানোর চেষ্টা করলেও পরান মেয়েকে বিয়ে দিবে মর্মে মাষ্টারের সাথে কথা বলেন। স্কুল মাষ্টার পরানকে বুঝাতে ব্যর্থ হলে অবশেষে স্কুল মাস্টার মানবাধিকার কর্মী ও থানার ওসি সাহেবের সহযোগিতা নিয়ে বিয়ের দিনে বিয়ে বাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেয়। অতপর পরান তার ভূল বুঝতে পেরে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে মেয়েকে আবার স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করে এবং একই দিনে বিয়ের আসরে নয়নের সাথে করিম বাউলের মেয়ে তারা বানুর বিয়ে হয়।’