হৃদয়ের মধ্যে এখনো ম্যাচিউরিটি আসেনি : সুজানা
সংগীতশিল্পী হৃদয় খান এবং মডেল সুজানা জাফরের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় গত বছরের ১ আগস্ট। এর আগে ২০০৬ সালে সুজানা একটি বিয়ে করেছিলেন। হৃদয় খানও ২০১০ সালে পূর্ণিমা নামের একটি মেয়েকে বিয়ে করেন। বিয়ের আগে হৃদয় ও সুজানার বন্ধুত্ব ছিল চার বছর। গতকাল সোমবার হৃদয় ও সুজানা দুজনেই তালাকনামায় স্বাক্ষর করেন। সোমবার দিবাগত রাতে হৃদয় তাঁর ফ্যানপেজে ‘হৃদয় খান’স ক্লাবে’ একটি ভিডিওবার্তা আপলোড করেন। তাতে বিবাহ বিচ্ছেদের কথা নিশ্চিত করেন তিনি।
নিজের বিবাহ বিচ্ছেদ ও অন্যান্য প্রসঙ্গে সুজানা কথা বলেছেন এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে।
প্রশ্ন : মনের অবস্থা নিশ্চয়ই এখন অনেক খারাপ?
উত্তর : মনের অবস্থা এখন অনেক খারাপ। আমি কখনো ভাবিনি হৃদয়ের রূপ বদলে যাবে।
প্রশ্ন : বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার প্রধান কারণ কী ছিল?
উত্তর : বিয়ের আগে হৃদয় আমাকে কথা দিয়েছিল, সে অন্যায় কিছু করবে না। কিন্তু বিয়ের দেড় মাস পরই হৃদয় বদলাতে শুরু করে। আমাদের উকিল বাবা-মা, পরিবার, আত্মীয়স্বজন সবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে হৃদয়। মিডিয়াকে আমি কখনই বলিনি, হৃদয়কে আমি ভালোবাসি। আমি সব সময় বলেছি, হৃদয় আমার অনেক ভালো বন্ধু। কিন্তু হৃদয় সব সময় আমাকে, পরিবারকে, বন্ধু-বান্ধব ও মিডিয়াকে বলেছে, সে আমাকে অনেক ভালোবাসে। হৃদয়কে বিয়ে করার কোনো ইচ্ছেই ছিল না আমার। বিয়ের আগে হৃদয় আমাকে বলেছিল, ‘তুমি বিয়ে না করলে আমি মরে যাব।’ আমাকে নানাভাবে সে তাঁর ভালোবাসার কথা প্রকাশ করেছিল। তাই আমি রাজি হয়েছিলাম বিয়ে করতে। কিন্তু বিয়ের আগে হৃদয় আমাকে যে কথা দিয়েছিল, সেটা সে রাখতে পারেনি। আমি হৃদয়ের সবকিছু করে দিতাম। কিন্তু হৃদয়ের দাবি, ‘আমি সাংসারিক মেয়ে নই।’ এটা সে এখন বলছে। কিন্তু কিছুদিন আগেও হৃদয় বলত, ‘আমার বউয়ের রান্না ছাড়া কোনো খাবার খেতে আমার ভালো লাগে না।’ আসলে হৃদয়ের মধ্যে এখনো ম্যাচিউরিটি আসেনি।
প্রশ্ন : বিচ্ছেদের আগে আপনাদের কি আলাপ হয়েছিল? দুজনের সিদ্ধান্তই কি ডিভোর্স হয়েছে?
উত্তর : বিচ্ছেদের আগে পারিবারিকভাবে আমাদের বৈঠক হয়। কাছের মানুষরা চেয়েছিল, আমাদের সম্পর্ক যেন টিকে থাকে। কিন্তু বৈঠকে হৃদয় ও আমার মধ্যে কোনো কথা হয়নি। প্রায় এক মাস হলো হৃদয়ের সঙ্গে আমার কোনো কথা হয় না।
বিচ্ছেদের আগে হৃদয় আমাকে একটা খুদে বার্তা পাঠিয়েছিল। সেখানে ও লিখেছে, ‘আমরা কি আর একবার চেষ্টা করে দেখতে পারি?’ উত্তরে আমি বলেছিলাম, ‘তাহলে স্ত্রীকে সম্মান করতে হবে।’ এর পর হৃদয়ের আর কোনো উত্তর আসেনি। পরে আমরা দুজনেই তালাকনামায় স্বাক্ষর করেছি। এখন পর্যন্ত হৃদয়ের সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি।
প্রশ্ন : আমরা শুনেছি হৃদয় আপনার কাজকে সম্মান করছে না, এটা কি ঠিক?
উত্তর : মিডিয়ায় কাজ করা হৃদয়ের পছন্দ নয়। এর পর আমি এমনও সিদ্ধান্ত নিয়েছি, হৃদয় বললে আমি মিডিয়ায় কাজ করা ছেড়ে দেব। কিন্তু যখন দেখলাম, আমার স্বামী আমাকে সম্মান করছে না, তখন গত কয়েক মাস মিডিয়ার কাজ আমি ইচ্ছে করেই বেশি করছিলাম।
প্রশ্ন : হৃদয় আবার ফিরে এলে তাকে কি গ্রহণ করবেন?
উত্তর : প্রশ্নই আসে না। একবার যে প্রতারণা করে, সে বারবার প্রতারণা করে। আমি তাঁকে সুযোগ দিয়ে ভুল করেছি। আর ভুল করতে চাই না। আমি চাই না আর কোনো মেয়ের স্বপ্ন ভাঙুক হৃদয়।
প্রশ্ন : আপনি অভিনয়ে ফিরছেন কবে?
উত্তর : আমার ভক্ত, দর্শক ও পরিবারকে ঠকাতে চাই না। আমার মনের অবস্থা এখন ভালো নয়। আমি পরিবারের সঙ্গে কিছুদিনের জন্য দেশের বাইরে যাব। সেখান থেকে ঘুরে এসে আবার শুটিংয়ে নিয়মিত হব। আমার কাজ আমি করে যেতে চাই। আমি এক আল্লাহ ও পরিবার ছাড়া আর কাউকে বিশ্বাস করতে চাই না।