মা কেন এত স্পেশাল?
কবি বলেছেন, মা কথাটি ছোট্ট অতি/ কিন্তু জেনো ভাই/ ইহার চেয়ে নামটি মধুর/ তিন ভুবনে নাই... সন্তানের জন্য মা সর্বত্র বিরাজমান। সন্তানের জন্য হেন কোনো কাজ নেই, মা করতে পারেন না। তাই মা শব্দটি এত মধুর, এত বিশেষ।
ভাবুন তো, আপনার মা আপনার জন্য কী কী করেন? আমি নিশ্চিত, ভাবতে ভাবতেই আপনার ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি চলে আসবে।
আপনার জন্মের পূর্ব থেকে আপনার নেওয়া শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত মায়ের কাছে আপনি একজন ছোট্ট শিশু, যাকে তিনি আগলে রাখতে চান। সন্তানের সুখ ও নিরাপত্তার জন্য একজনের পক্ষে যা কিছু সম্ভব, তার সবকিছু একজন মা করে থাকেন। সন্তান যখন বাইরে যান, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মা তখন প্রতিনিয়ত খবর নিয়ে নিশ্চিত হতে চান তাঁর সন্তান ঠিক আছে এবং তাঁর আদরের সন্তানের কোনো প্রকার ক্ষতি হয়নি।
প্রতি বছর মাতৃত্বকে স্যালুট ও মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মে-র দ্বিতীয় রোববার আমরা মা দিবস পালন করে থাকি। সে অনুযায়ী আজ ৯ মে মা দিবস। সারা বিশ্বে দিবসটি উদযাপন হচ্ছে আর মায়ের জন্য যথাসাধ্য ভালোবাসা প্রকাশ করছেন সন্তানেরা।
বিশেষ এ দিনে আমরা বলতে পারি, মা সত্যিই বিশেষ আর খুবই মূল্যবান। আর এ বিশেষ হওয়ার পেছনে হাজারও কারণ রয়েছে। ভারতের স্বাস্থ্য ও জীবনধারাবিষয়ক সাময়িকী বোল্ডস্কাইয়ের এক নিবন্ধ অনুযায়ী আজ আমরা তেমনই কিছু কারণ উল্লেখ করব—
মা সব জানে
সন্তানের সব কিছুই মা জানেন। আপনার মুখ দেখলেই তিনি সব বলে দিতে পারবেন। আমাদের বর্তমান আবেগিক ও মানসিক অবস্থা সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল মা। তিনি এমন কিছু জানেন, যা আর কেউ কখনও জানতে পারেন না। সন্তানের পছন্দ-অপছন্দের প্রতিটিই তাঁর জানা। সন্তানকে তাঁর চেয়ে বেশি আর কেউ বোঝেন না। আর এ কারণেই তিনি বিশেষ।
মায়ের ভালোবাসা নিঃশর্ত
মা হলেন এমন একজন, যাঁর ভালোবাসার মধ্যে কখনওই কোনো স্বার্থ লুকিয়ে থাকে না। সন্তানের জীবনের সমস্ত অপূর্ণতা পূর্ণ হয়ে ওঠে মায়ের আশীর্বাদে। জীবনের প্রতিটি স্তরে মায়ের চেয়ে বড় রক্ষাকর্তা দ্বিতীয় আর কেউ হয় না। মায়ের ভালোবাসা অসীম। আপনি যদি কোনো ভুলও করে থাকেন, মা প্রায় সর্বদা ক্ষমা করে দেবেন।
মা আমাদের প্রথম শিক্ষক
প্রথম শব্দ থেকে জীবনের প্রায় সমস্ত শিক্ষা আমরা মায়ের কাছ থেকে পেয়ে থাকি। মা প্রথম ও সেরা শিক্ষাগুরু। মা যখন অন্তঃসত্ত্বা থাকেন, তখন প্রায়ই তিনি ভালো বই পড়েন, ধর্মীয় অনুষঙ্গগুলো আওড়ান আর ভালো কিছু লেখার চেষ্টা করেন। তিনি নিশ্চিত হতে চান, তাঁর সন্তান বড় হয়ে সুশিক্ষিত হবে এবং পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে। তিনি আমাদের ভেতরে সত্তাকে জাগ্রত করেন।
আমাদের উৎসাহদাতা
এ কথা বললে বাহুল্য হবে না, মা ছাড়া আমাদের পৃথিবী অসহায় হয়ে পড়বে। বাস্তবতার যাবতীয় নিষ্ঠুরতা আর কঠিনতম সময়েও মা আমাদের শক্তি জোগান, উৎসাহ দেন। কখনওই ভেঙে পড়তে দেন না। তিনি শুধু তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতাই ভাগ করেন না, প্রেরণাও জোগান। আর এভাবে আমাদের ভেতরে আত্মবিশ্বাস বাড়ান।
আমাদের সর্বদা বিশ্বাস করেন
যদি পুরো পৃথিবী আপনার বিপক্ষে যায়, তবু মা আপনার পাশে থাকবেন। আপনার মেধার ওপর বিশ্বাস হারাবেন না। মা সব সময় আমাদের বিশ্বাস করেন, আস্থা রাখেন। মায়ের কাছে সন্তান সব সময়ই ভালো। পৃথিবী যতই আমাদের সমালোচনা করুক না কেন, মা করবেন না।
সব সমস্যার সমাধান
মা যেন সব সমস্যার সমাধান। কি পরীক্ষার সময়, কোথাও যেতে হলে কী পরবেন, মায়ের কাছে ইত্যাকার সমাধান রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, জীবনযুদ্ধেও মা সমাধানদাত্রী। তাই মা এত বিশেষ।
আপনার সেরাটা তুলে আনবেন
জীবনে এমন সময়ও আসে, যখন আপনি নার্ভাস ফিল করছেন। নিজেকে বারবার আনফিট মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, নির্দিষ্ট দায়িত্বটা আপনি ঠিকমতো সামলাতে পারবেন না। এ সময় ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হবেন মা। তিনি আপনার ভেতরের সেরাটা ঠিক বের করে নিয়ে আসবেন, যাতে আপনি নার্ভাস না হন, অসহায় বোধ না করেন। আর মায়ের প্রেরণায় আপনিও সেই কাজটি ঠিকঠাক করতে পারবেন। এ জন্যই তো মায়ের বিকল্প হয় না। মায়ের তুলনা মা-ই।