বিমানের ভেতর আদবকেতা
প্রায়ই আমাদের দীর্ঘ বিমান যাত্রা করতে হয়। আর সে কারণেই বিমান যাত্রায় বেশ কিছু আদবকেতা মেনে চলতে হয়। কারণ লম্বা ভ্রমণে ঘুমানোর প্রয়োজন হয়। কিছু বেরসিক সহযাত্রী যাত্রাপথে জুটেই যাবে কিন্তু তাদের যেমন সামলে রাখতে হবে তেমনি নিজেরও কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে।
১. নিজের ব্যাগটা সবসময় সামনের দিকে রাখুন এবং চেষ্টা করুন সেটা চাপিয়ে রাখতে। এতে আইল ধরে হাঁটার সময় বাকিদের হাতে, পায়ে ব্যাগের গুতো লাগবে না। আপনার ব্যাগের নিচে চাকা থাকলে সেটা টেনে নিতে সুবিধা হবে পরে।
২. মাথার ওপরে ব্যাগ রাখার যে জায়গাগুলো আছে সেগুলোর সদ্ব্যবহার করুন। নিজের মালামাল রেখে ওপরের ডালা বন্ধ করে দিন। তবে নিজের সারি বাদ দিয়ে অন্যের সারিতে ব্যাগ রাখতে যাবেন না। তাড়াতাড়ি বের হওয়ার জন্য আইলে বা সিটের পাশে ব্যাগ রাখবেন না। এতে অন্যদের চলাচলে বাধার সৃষ্টি হবে।
৩. সিটে বসেই পেছনের দিকে হেলান দিয়ে বসবেন না। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। যখন প্রয়োজন হবে একবারে সিটটি না বাঁকিয়ে ধীরে ধীরে বাঁকিয়ে নিজের মতো করে জায়গা করুন। পেছনের সিটের যাত্রীর আপত্তি থাকলে সিট বেশি না বাঁকানোই ভালো। দুম করে সিট নামিয়ে ফেললে পেছনে থাকা যাত্রীর গায়ে লাগতে পারে। তিনি পায়ে ব্যথা পেতে পারেন।
৪. সিট বাঁকানোর আগে পেছনে তাকিয়ে দেখুন আপনার পেছনে বসা সহযাত্রী লম্বা কি না বা তার কোলে কোনো বাচ্চা বসে আছে কি না। থাকলে সাবধানে সিট বাঁকান যাতে তাদের গায়ে আঘাত না লাগে।
৫. যদি আপনার সাথে বাচ্চারা থাকে তাহলে তাদের প্রতি সতর্ক নজর দিন। কারণ বাচ্চারা না বুঝেই অন্যের সিটে উঠে লাফালাফি করতে পারে বা আইল ধরে ছোটাছুটি করতে পারে। বাকি যাত্রীরা এতে বিরক্ত হতে পারে। তাই বাচ্চাদের নিজের কাছে রাখুন, ছেড়ে দেবেন না।
৬. আপনার সহযাত্রী যদি বারবার বলার পরও নিজের মতো করে সিট বাঁকিয়ে বা আচরণের মাধ্যমে আপনাকে বিরক্ত করতে থাকেন, তাহলে তাঁর সাথে তর্কে না জড়িয়ে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের কাউকে ডাকুন, তাঁকে সমস্যার কথা জানান।
৭. দীর্ঘ ফ্লাইটে চুপ করে বসে থাকা অনেকেরই পোষায় না। তবে আপনাকে আগে বুঝতে হবে আপনার সহযাত্রী আপনার সাথে আলাপে আগ্রহী কি না। কথা বলার চেষ্টা করে দেখুন। যদি তিনি অল্পতেই সারতে চান তাহলে বুঝতে হবে তিনি আগ্রহী নন। অতএব তাঁকে জ্বালাতন না করে নিজের মতো থাকতে দেওয়াটাই ভালো হবে।
৮. নিজের জিনিসপত্র কাছাকাছি রাখুন। অন্যের সিটে মাফলার, জ্যাকেট বা অন্য কোনো বস্তু রেখে বিরক্ত করবেন না।
৯. নিজের প্রয়োজনে হেডফোন, বই, ম্যাগাজিন কাছে রাখুন। অন্যেরটা নিয়ে টানাটানি করবেন না। ফোনে বা মিউজিক প্লেয়ারে গান শোনা বা মুভি দেখার সময় কানে হেডফোন লাগিয়ে নিন। এর আওয়াজ যেন অন্য কারো বিরক্তির কারণ না হয়।
১০. নামার সময় তাড়াহুড়া করবেন না। পাশের যাত্রীর গায়ের ওপর উঠে যাবেন না। যদি কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার তাড়া থাকে তাহলে চেষ্টা করুন সিট বুকিংয়ের সময় সামনের দিকের সিট নিতে। তাহলে নামার সময় সহজেই আগে নামতে পারবেন।