কথোপকথনে তর্কাতর্কি এড়াতে কী করবেন?
যেকোনো কথোপকথন শান্ত-সুন্দরভাবে শুরু হয়। অথচ কিছুক্ষণ পরে সামান্য কথা থেকেই বেধে যায় তর্কাতর্কি। রাগের মাথায় একজন অপরজনকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে দু’কথা শুনিয়ে দিতে দ্বিধাবোধ করেন না। ঝামেলা থেমেও গেলেও, অনেক সময়েই রাগের মাথায় বলা ফেলা কথার জেরে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে।
বন্ধু হোন বা কর্মক্ষেত্রে কোনো সহকর্মী অথবা অন্য কোনো পরিচিত ব্যক্তি, অনেক সময় অন্যের কথা পছন্দ না হলেও শুনতে হয়। কখনো সেই কথার পাল্টা যুক্তি দেখাতে গেলে শুরু হয় অশান্তি। সামান্য কথা থেকে তর্কাতর্কির জায়গাও তৈরি হয়। রাগের মাথায় সেই পরিস্থিতির পরিণতি সম্পর্কে ধারণা করা যায় না ঠিকই, তবে পরবর্তী সময়ে এর প্রভাব পড়তে পারে ব্যক্তিগত বা কর্মজীবনে। কথা শুরু করার পর যদি দেখেন, তা তর্কাতর্কির দিকে মোড় নিতে চলেছে, তখন কী করবেন? নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করবেন, না কি অন্যকে?
মনোবিজ্ঞানী মোহিত রণদীপের কথায়, পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়ার আগে সেটি থামানো দরকার। কিছুটা আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে, কিছুটা সেই পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কী সেই উপায়?
১. সহকর্মীর সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়তো এমনদিকে মোড় নিল, যেখান থেকে উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ অনুযায়ী, তখন কিন্তু নিজেরই ভাবা দরকার, এর পরিণতি কী? আদৌ কি অন্য মানুষটি আপনার কথা বুঝবেন? যদি না বোঝেন, কথা বাড়িয়ে কী লাভ? সেখানেই থেমে যেতে পারেন।
২. যদি মনে হয়, কথোককথন থেকে ঝগড়ার সূত্রপাত হতে পারে, তখনই তাতে ইতি টানতে পারেন। এই বিষয়টি নিয়ে এখন আলোচনা করে লাভ হবে না বা আপনি আর কথা বাড়াতে চান না, সেটি অন্য পক্ষকে শান্ত অথচ দৃঢ়ভাবে জানানো যেতে পারে।
৩. পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার সূত্রপাত হলে, পরে কথা বলবেন জানিয়ে নিজেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। এই সময় মুখে-চোখে একটু পানি দিলে বা কোথাও শান্ত হয়ে বসলে, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
৪. অন্য পক্ষকে শান্ত করতে সেই মুহূর্তে কথা থামিয়ে বলতে পারেন, ‘এখন একটু চা খেয়ে আসা যাক, পরে এ নিয়ে আলোচনা হবে’। সাময়িক বিরতি কিন্তু উত্তপ্ত তর্কাতর্কি এড়াতে কাজে আসতে পারে।
মোহিতের কথায়, যেকোনো কথোপকথন এগোনোর আগে কার সঙ্গে, কোন বিষয় নিয়ে কতটা আলোচনা করা যেতে পারে, ভেবে রাখা ভালো। যার সঙ্গে পেশাগত সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে, তার সঙ্গে বিষয়টি যাতে উষ্ণ বাক্য বিনিময়ে না পৌঁছায়, সে বিষয়ে আগাম সতর্ক হওয়া যেতে পারে। মতের অমিল হলে, ধীরে বোঝানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। কিন্তু তাতে লাভ না হলে, বিষয়টিতে সেই মুহূর্তে ইতি টানাই ভালো।