রোজার বাজার প্রস্তুতি
বছর পেরিয়ে আবারও আসছে মুসলমানদের সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজান। মাসটি ধর্মীয় গাম্ভীর্যের দিক থেকে অন্য মাসের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এমনকি খাবারের মেন্যুও এ মাসে পুরোপুরিভাবেই বদলে যায়। সেহরি ও ইফতারকে ঘিরে বাসাবাড়িতে চলে দৈনন্দিন উৎসব। এই দুই সময়ে খাবারের তালিকায় রয়েছে বেশ পরিবর্তন। একদিকে ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু বা মজার স্বাদের মুখরোচক খাবার ছাড়া যেন জমে ওঠে না ইফতার। অন্যদিকে সেহরির তালিকায় থাকে স্বাস্থ্যকর সব খাবারের আয়োজন। এই বিষয় মাথায় রেখেই রোজার বাজার প্রস্তুতি শুরু হয়।
রমজানকে সামনে রেখে দোকানিরাও যেন সাজিয়ে বসেছেন রোজার নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচাবাজার। বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে ইফতারি ও সেহরির প্রয়োজনীয় সব পণ্য সামগ্রী। তবে প্রতিবারের মতোই এবারও দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, রসুনসহ মসলা জাতীয় পণ্যের। আর দোকানিরা বলছেন গতবারের তুলনায় কিছুটা দাম কমেছে চাল, ভোজ্য তেল, আটা ও ময়দার। বনানী, মহাখালী, মিরপুর ও কারওয়ানবাজারের পণ্যের বাজার দামের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।
ডাল ও ছোলার বাজার
রোজার বাজারে সর্বপ্রথম নজরে আসে ডাল ও ছোলার বিষয়টি। বাজার ঘুরে দেখা গেল, দেশি ও বিদেশি দুই ধরনের মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে। মূল্য ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। এর মধ্যে দেশি ডাল পাবেন ১১০ থেকে ১১২ টাকায়, বিদেশি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। আর মুগডাল সরু ও মোটা পর্যায়ক্রমে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা ও ৯৫ থেকে ১০০ টাকা। অন্যদিকে ছোলা মিলবে বিদেশি ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। দেশি খেসারি পাবেন ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় আর মাষকলাই ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়।
মসলার বাজার
পেঁয়াজ পাবেন কেজিপ্রতি ৪২ থেকে ৪৫ টাকায় দেশিটি, আর বিদেশি ৩২ থেকে ৩৫ টাকায়। দেশি রসুন মিলবে ৬০ থেকে ৭৫ টাকায়, বিদেশি ৯০ থেকে ১০৫ টাকায়। শুকনো মরিচ ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, হলুদ ১৮০ থেকে ১৯৫ টাকায়, আদা দেশ ভেদে ১১০ থেকে ১৪৫ টাকায় রয়েছে। কাঁচামরিচ ২৫ থেকে ৩৫ টাকা মাত্র।
তেলের বাজার
বাজারে দুই ধরনের তেল পাওয়া যাচ্ছে একটি খোলা অন্যটি প্যাকেট বা বোতলজাত। এ ছাড়া একটু সস্তায় খুজলে নিতে পারবেন পাম অয়েল। সয়াবিন তেল খোলাটি পাবেন প্রতি লিটার ৭৮ টাকা থেকে ৮২ টাকায়। বিভিন্ন কম্পানির পাঁচ লিটারের ক্যান ৪৫৫ থেকে ৪৭৮ টাকায় পাবেন, তবে এক লিটার মিলবে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। সরিষার তেলের বাজার মূল্য ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। অন্যদিকে পাম ওয়েল পাবেন মাত্র ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়।
মাংস
বাজার ঘুরে গরুর মাংস পাবেন প্রতি কেজি ৩৬৫ থেকে ৩৮৫ টাকায়, খাসি ৪৯০ থেকে ৫৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা। তবে কক সোনালি পাবেন ২৫৫ থেকে ২৭০ টাকায়। অন্যদিকে ব্রয়লার ১৪৫ থেকে ১৬৫ টাকায় পাবেন।
চাল-আটা ও চিনি
নাজিরশাইল চাল পাবেন প্রতিকেজি ৪৬ থেকে ৫৪ টাকায়, মিনিকেট ৪১ থেকে ৪৭ টাকায়। পারিজা, হাসকি ও বিআর-২৮ পাবেন ৩২ থেকে ৩৯ টাকা কেজি দরে। বেশ সস্তায় পাবেন গুটি ও স্বর্ণা মাত্র ৩০ থেকে ৩৩ টাকায়। আর কালিজিরা ও চিনিগুঁড়া- এসব সুগন্ধি চাল মিলবে ৭২ থেকে ৯০ টাকায়। অন্যদিকে খোলা সাদা আটা পাবেন প্রতি কেজি ২৭ থেকে ৩২ টাকায়, প্যাকেট আটা ৩৩ থেকে ৩৬ টাকায়। ময়দা পাবেন ৩২ থেকে ৩৫ টাকায় খোলাটি। আর প্যাকেট মিলবে ৪১ থেকে ৪৪ টাকায়। এ ছাড়া খোলা চিনি প্রতিকেজি ৪২ টাকা, প্যাকেট চিনি ৪৭-৫১ টাকা।
সবজি
বাজার ভেদে আলু পাবেন ১৮ থেকে ২০ টাকায়, বেগুন ৩১ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ২২ থেকে ২৫ টাকা, শশা ২০ থেকে ৩০ টাকা, ঝিংগা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বরবটি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কচুরলতি ২০ থেকে ৩০ টাকা, চিচিংগা ২২ থেকে ২৮ টাকা, পটল ২০ থেকে ৩০ টাকা, ঢেড়স ২০ থেকে ২৫ টাকা, টমেটো ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, করল্লা ২৫ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য
ট্যাং ৭৫০ গ্রাম ৫১০ টাকা, রাসনা ফ্রুট প্লাস ম্যাঙ্গো জার ৭৫০ গ্রাম ৩৭০ টাকা, ফাস্টার ক্লার্ক’স তাৎক্ষণিক ফ্লেভার লেবু পানীয় ৭৫০ গ্রাম ৫৩০ টাকা, রুহ আফজা ৩০০ মিলি ১১৫ টাকা। এ ছাড়া আখের গুড় ৬২ থেকে ৭৫ টাকা, খেজুর ৫০ থেকে ১১০ টাকা। ফার্মের ডিম প্রতিহালি ৩০-৩৪ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৪৫-৪৮ টাকা এবং হাঁসের ডিম ৩৮ থেকে ৪২ টাকা।
এছাড়া বাজার ঘুরে কিনে নিতে পারেন রোজায় আপনার পছন্দের যেকোনো খাবারের উপকরণ বা খাবারটি।