উদরপূর্তি
লেক দেখুন আর খাবার খান পিকাসোতে
পাঁচতারা হোটেলের আবহে বসে, হাতিরঝিলের মনোরম দৃশ্য দেখতে দেখতে মুখরোচক খাবার খেতে চান? অথবা খাবার শেষে চাইছেন সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে? কন্টিনেন্টাল, ইতালিয়ান, থাই, চাইনিজ, মেডিটেরেনিয়ান সব পদের খাবারই রয়েছে এই রেস্তোরাঁয়! অভিজাত এই রেস্তোরাঁর প্রতিটি কোণায় রয়েছে শৈল্পিক ছোঁয়া। যা আপনাকে এক নিমেষেই নিয়ে যাবে চিত্রশিল্পী পাবলো রুইজ ই পিকাসোর আমলে। আর ধৈর্য ধরতে হবে না- এতক্ষণ বলছিলাম পিকাসো রেস্তোরাঁর কথা।
এ বছরই ২৮ আগস্ট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ‘পিকাসো’। তিনতলাজুড়ে সাজানো হয়েছে পিকাসোকে। রেস্তোরাঁর ১২তলায় ঢুকতেই রয়েছে ওপেন কিচেন। এর একপাশে রয়েছে কফি ও জুস কর্নার। আর অন্য পাশের দরজা দিয়ে ঢুকলেই দেখবেন সোফা দিয়ে সাজানো একটা অংশ। এটাকে আলাদা ছোটখাট রেস্তোরাঁ বলা যায়। এ ছাড়া বিপরীত দিকেই রয়েছে ভিআইপি লাউঞ্জ। পুরো ফ্লোরে মোট ১১০ জন একসঙ্গে বসে খাবার খেতে পারবেন। ১৩ তলার সিঁড়ি দিয়ে উঠলে দেখতে পাবেন দেয়ালজুড়ে ঝুলানো সব চিত্রকর্ম। এগুলো অবশ্য বিক্রি করার জন্য রাখা হয়েছে। তরুণ শিল্পীদের হাতে আঁকা এসব ছবি রেস্তোরাঁর নকশাকে বদলে দিয়েছে পুরোপুরি। এই তলায় রয়েছে দুটি ভাগ। ভিতরের দিকে রঙিন সোফা আর মার্বেল পাথরের টেবিল দিয়ে সাজানো হয়েছে। আর বাইরে দিকেও খোলা আকাশের নিচে রয়েছে বসার সুব্যবস্থা। দাঁড়িয়ে থাকা ল্যাম্পপোস্টগুলো আপনার নজর না কেড়ে পারবেই না। মোট ১৮০ জনের বসার সুব্যবস্থা রয়েছে এখানে।
রেস্তোরাঁর বাকি অংশ রয়েছে ছাদে। বলতে গেলে রেস্তোরাঁর পুরো আকর্ষণই এখানে। জাহাজের আদলে গড়া এই অংশে খোলা আকাশের নিচে বসে চেখে নিতে পারবেন দারুণ সব খাবারের স্বাদ। পাশেই রয়েছে ছোট্ট একটি সুইমিংপুল। চাইলে এখানে সাঁতার কাটতে পারবেন। তবে এজন্য আপনাকে টাকা খরচ করতে হবে। পাঁচ ঘণ্টার জন্য ৫০০ টাকা। আর সারাদিনের জন্য ৭৫০ টাকা ব্যয় করতে হবে। মোট ১১০ জনের বসার সুব্যবস্থা রয়েছে এখানে।
পিকাসো রেস্তোরাঁর উদ্যোক্তা অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত সাবেক হাইকমিশনার লে. জেনারেল(অব.) মাসুদ উদ্দীন চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, “মূলত হাতিরঝিলের কারণেই এই জায়গাতে রেস্তোরাঁটি করার কথা ভাবি। আর ফাইন ডাইনিং রেস্তোঁরা আমাদের দেশে খুব একটা নেই। এ কারণেই পিকাসোর পুরো পরিবেশে এই আমেজ রাখার চেষ্টা করেছি। আর আমি ব্যক্তিগতভাবে চিত্রশিল্পী পিকাসোর অনেক বড় ভক্ত। তাই রেস্তোরাঁর দেয়াল চিত্রকর্ম দিয়ে সাজিয়েছি।”
পিকাসোতে গেলে খেতে পারবেন চিকেন সালাদ ইন কানি মাস্টার্ড ড্রেসিং, সিফুড পাস্তা সালাদ উইথ ককটেল ড্রেসিং, ক্রিসপি চিকেন পানিনি, চিকেন চিজ বার্গার, গ্রিলড চিকেন উইথ বার্বিকিউ সস, চিকেন চিলি অনিয়ন, বিফ ওয়েস্টার, স্টিম হোল স্নাপার উইথ থাই সস, তান্দুরি চিংড়ি, পিকাসো স্পেশাল চিকেন কাবাব, কাশ্মীরি স্টাইল মাশরুম কাবাবসহ মুখরোচক সব খাবার। এ ছাড়া বিভিন্ন ডেজার্টসহ চা-কফি তো রয়েছেই। সেট মেনু এবং অ্যালাকার্ডে খাবার খেতে পারবেন। এছাড়া যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্য ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী খাবার কাস্টমাইজড করে দেওয়া হয়। এখানে সারপ্রাইজ পার্টিরও সুব্যবস্থা রয়েছে। তবে দামটা কিন্তু একেবারেই হাতের নাগালে।
তাহলে আর দেরি না করে আজই একবার ঢু মেরে আসুন তেজগাঁও লিঙ্ক রোডের ১৯১/বি তে অবস্থিত ‘পিকাসো’ রেস্তোরাঁ থেকে। অভিজাত পরিবেশে বসে খাওয়ার আমেজটি পাবেন পুরোপুরি।
পিকাসো স্পেশাল রেসিপি
বার্বিকিউ গ্রিলড কিং প্রাউন
উপকরণ
মাঝারি সাইজের চিংড়ি মাছ চারটি, লেবুর রস দুই টেবিল চামচ, হোয়াইট পেপার আধা চা চামচ, ব্লাক পেপার আধা চা চামচ, রসুন কুচি এক টেবাল চামচ, বার্বিকিউ সস দুই টেবিল চামচ এবং লবণ স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে চিংড়ির সঙ্গে সব উপকরণ মিশিয়ে মেরিনেটের জন্য আধা ঘণ্টা রেখে দিন। এবার চাইলে একটি ফ্রাই প্যানে অথবা গ্রিলারে বাদামি হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। এরপর বার্বিকিউ সস দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন বার্বিকিউ গ্রিলড কিং প্রাউন।
চিকেন পানিনি
উপকরণ
পাউরুটি ১০০ গ্রাম, সানরাইজ টমেটো পাঁচটি, সুইট বেসিল পেসতো দুই টেবিল চামচ, বেল পেপার তিনটি, স্লাইস চিজ একটি, স্লাইস চিকেন গ্রিল ১০০ গ্রাম।
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে পাউরুটি টোস্টের মতো করে গ্রিল করে নিন। এবার সব উপকরণ রুটির মধ্যে সাজিয়ে ওভেনে ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দুই মিনিট বেক করুন। ওভেন থেকে বের করে সুইট বেসিল পেসতো সস ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন ইতালীয়ান চিকেন পানিনি।