মা-মেয়ের বন্ধুত্ব
জন্মলগ্ন থেকেই মায়ের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক একটু অন্যরকম। সব কথা বলা, কাছাকাছি থাকা আর একে অন্যের অনুভূতি বোঝার ক্ষমতার কারণেই মা-মেয়ের সম্পর্কটি বন্ধুত্বের হয়ে থাকে। মেয়েদের কাছে মা একইসাথে অভিভাবক, বন্ধু, শিক্ষক। আপনাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ককে আরো গভীর করতে কিছু ছোট ছোট বিষয় মেনে চলুন। দেখবেন, আপনাদের মা-মেয়ের সম্পর্কটি আরো স্বচ্ছ, আরো মধুর হবে।
আজ মা দিবসে জেনে নেওয়া যাক মায়ের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্কের রসায়ন আরো জমিয়ে তোলার কিছু দিক।
একসঙ্গে কেনাকাটা
কেনাকাটা করতে কে না ভালোবাসে? আর মায়ের সঙ্গে কেনাকাটা করতে গেলে মিলেমিশে পছন্দ করা যায় সবচেয়ে ভালো জিনিসটা। সব আবদার, সব সাধ পূরণ যেন শুধু মা-ই করতে পারেন। কেনাকাটাগুলো মায়ের সঙ্গেই করার চেষ্টা করুন। এতে দুজনের সম্পর্কটি অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ হবে।
বিউটি সেলুনে মাকে নিয়ে যাওয়া
মাসে অন্তত একবার মাকে নিয়ে বিউটি সেলুনে যান। এতে মায়ের সঙ্গে আপনিও বিশ্রামের কিছুটা সময় পাবেন। একান্তে নিজেদের না বলা কিছু কথা বলারও সুযোগ পাবেন। মা মনে মনে বুঝবেন আপনি তাঁর কতটা যত্ন নেন। তাঁর কথা কতটা ভাবেন। এই ছোট ছোট অনুভুতিগুলোই মা-মেয়ের সম্পর্ককে আরো গভীর করে।
সিনেমা দেখা
অনেকে বড় হয়ে গেলে মায়ের সঙ্গে সিনেমা দেখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। কিন্তু মায়ের সঙ্গে তাঁর প্রিয় সিনেমা দেখার আনন্দ বলে বোঝানো সম্ভব না। এক বাটি পপকর্ন ভাজা নিয়ে আজই মায়ের সঙ্গে একটি সিনেমা দেখে ফেলুন। সিনেমা দেখে একসঙ্গে হাসুন, একসঙ্গে কান্না করুন। এই অনুভূতিটুকু মা-মেয়ের সম্পর্ককে আরো মধুর করে। মা-মেয়ে মিলে চলে যান রাজ্জাক-ববিতা বা উত্তম-সুচিত্রার সাদাকালো সেই নির্ভেজাল ভালোবাসার জগতে।
কোথাও ঘুরতে যাওয়া
আপনি আপনার বান্ধবীদের সঙ্গে যদি দূরে কোথাও ঘুরতে যেতে পারেন তাহলে মায়ের সঙ্গে ঘুরতে যেতে সমস্যা কী? এটা আপনাদের দুজনের জন্যই কাছে আসার অনেক ভালো একটা উপায়। তবে ভুলেও এটাকে পারিবারিক পিকনিক করবেন না। এই সময়টুকু শুধু আপনার আর আপনার মায়ের।
স্মৃতি রোমন্থন
আপনি কী মনে করতে পারেন, আপনার মা যখন তরুণী ছিলেন তখন দেখতে কেমন ছিলেন? মনে না থাকলে আজই স্মৃতির সেই পুরনো অ্যালবামটি একসাথে মায়ের সঙ্গে বসে দেখুন। দেখবেন, ছবিগুলো দেখে মা আপনার সঙ্গে নানা স্মৃতির কথা বলবে। এসময় মা আপনাকে নিজের বান্ধবী ভেবেই পুরনো অনুভুতির কথা জানাবে। এতে আপনাদের সম্পর্কটি আরো সহজ হবে।
একসাথে শেখা
যদি আপনার এবং আপনার মায়ের কোনো একটা বিষয়ে বেশ আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু একদমই সময় পান না সেই বিষয়ে কোনো কথা বলার। তাহলে নিজেরা একটু সময় বের করে নিন কোনো একটি কোর্সে ভর্তি হওয়ার। হতে পারে পেইন্টিং, রান্না বা আবৃত্তির শর্টকোর্স। এ ছাড়া একসঙ্গে জিমেও ভর্তি হতে পারেন।
একসাথে কোথাও হেঁটে আসুন
আপনার কী মনে পড়ে সেই পার্কের কথা, যেখানে আপনার মা আপনাকে খেলতে নিয়ে যেত? এখনই সময় সেই পার্কে আবারও যাওয়ার। কারণ আপনার মা এখন একা। তাঁর খেলার সঙ্গী এখন অনেক বড়। তাই আজই সেই ছোট শিশুটির মতো মাকে নিয়ে পার্কে হেঁটে আসুন। তবে অনেক বেশি দূরে যাবেন না। মায়ের শরীরের কথা ভেবে ধারে কাছে কোথাও হেঁটে আসুন। এতে একে অন্যকে ভালো সঙ্গ দেওয়া হবে।
একসঙ্গে রান্না করুন
মায়ের হাতের রান্না দারুণ সুস্বাদু হয়, এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। যে খাবারটি আপনার খুব পছন্দের, মায়ের কাছ থেকে সেই রান্নাটি শিখে নিন। এতে বেশ খানিকটা সময় আপনারা একে অন্যকে দিতে পারবেন। অথবা ইন্টারনেট থেকে নতুন কোনো রেসিপি মাকে সাথে নিয়ে রান্না করুন। ভালো হোক খারাপ হোক একসঙ্গে রান্না করার আনন্দটা পুরোপুরি আলাদা।
একসঙ্গে চা খাওয়া
এক কাপ চা পেট থেকে অনেক কথা বের করে আনতে পারে। মায়ের সঙ্গে একটু সময় পেলেই কফি নিয়ে আড্ডায় বসে যান। দেখবেন, সারাদিনের কাজের মাঝে মাও একটু সময় পাবেন বিশ্রামের, গল্প করার। সেই সঙ্গে আপনাদের সম্পর্কের মধ্যকার দ্বিধাদ্বন্দ্বও থাকবে না।
মায়ের কাজে সাহায্য করা
প্রতিদিনই তো আপনার মা ঘরের সব কাজ করেন। মাঝেমধ্যে মায়ের কাজে কিছুটা সাহায্য করুন। এতে মা আপনার সঙ্গ পাবেন আবার কাজের মাঝে একটু স্বস্তিও পাবেন।