ঈদের ছুটিতে বাসা ছাড়ার পূর্বে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি
জীবিকার তাগিদে শত শত মানুষ ঢাকা বসবাস করেন। এরপর ঈদের ছুটিতে অল্পকিছু সময় সুযোগ মিললেই নাড়ির টানে সবাই ছুটে যান গ্রামের বাড়িতে। ফলে ঢাকা অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায়। এ সময় ফাঁকা ঢাকায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধ বেড়ে যায়। তাই ছুটির সময় বাসা ছেড়ে যাওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নেওয়া যাক। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার পূর্বে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি।
– বাড়ির মূল ফটকের লকের সমস্যা ও ভাঙা জানালার দিকে সর্বপ্রথম নজর দেওয়া জরুরি। এছাড়া বিদ্যুৎ, গ্যাস, ও পানি সরবরাহের লাইনে কোন ত্রুটি আছে কি না। বাড়ি ছাড়ার আগ মুহূর্তে চোখে পড়লে দ্রুত এগুলো মেরামতো করে নিতে হবে।
– বাড়ি ছাড়ার আগে পানির কলের প্যাচ ঢিল হওয়ার কারণে যদি ফোটায় ফোটায় পানি পড়তে থাকে তাও মেরামতো করে নেওয়া দরকার। প্রতিটি ঘরের বিদ্যুৎ সুইচগুলো বন্ধ আছে কি না দেখতে হবে। টেলিভিশন, কম্পিউটার, ওভেন, রাউটার, ফ্যানের মতো বিদ্যুৎ সংযোগকৃত প্রতিটি যন্ত্রপাতি বন্ধ করে দিতে হবে। দেওয়াল এবং টেবিল ঘড়ির ব্যাটারিগুলো খুলে যথাস্থানে সংরক্ষণ করতে হবে।
– ফ্রিজের ক্ষেত্রে যেসব খাবার সময়ের সঙ্গে নষ্ট হয়ে যায়, সেগুলোকে সতেজ রাখার জন্য ফ্রিজে বিদ্যুৎ সংযোগ রাখা ছাড়া কোনো উপায় নেই। তবে বাড়ি যাওয়ার আগেই পচনশীল খাবারগুলো শেষ হয়ে গেলে ভালো। সেক্ষেত্রে ফ্রিজ চালু রাখতে হবে না। বাড়ি যাওয়ার আগের দিন ফ্রিজের ভেতরটা ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। ফ্রিজে এমন কিছু রাখা যাবে না, যা পরবর্তীতে দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে।
– আলমারি, টেবিল, দেরাজ বা কেবিনেটের লকারগুলো ভালো করে চেক করতে হবে। কোনো ত্রুটি থাকলে তা ঠিক করে নিশ্চিত করতে হবে যেন সেগুলো মজবুতভাবে বন্ধ থাকে। কেননা এগুলোতে নগদ টাকা, ডেভিট বা ক্রেডিট কার্ড, অলঙ্কার, সার্টিফিকেটসহ মূল্যবান সব জিনিসপত্র রাখা হয়। এগুলোর কোনোটাকেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে টেবিল বা বিছানার উপর ফেলে রাখা ঠিক নয়।
– খাবারের পরপরই থালা-বাসন ধুয়ে রাখা হলে এই কাজটি অনেকটা এগিয়ে যায়। রান্নাঘরে প্রায় ক্ষেত্রে ফল ও সবজি স্তূপ করে রাখা হয়। এভাবে এলোমেলাভাবে না রেখে প্রত্যেকটিকে তার যথাস্থানে রাখতে হবে। এতে করে রান্নাঘরের ময়লা পরিষ্কার করতে সুবিধা হবে।
– সিঙ্কের জায়গা, কেবিনেট, শেল্ফ ও তৈজসপত্র ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখা উত্তম। এতে করে ছুটি শেষে বাসায় ফিরে এসে নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশের সম্মুখীন হতে হবে না। একই সঙ্গে বাড়ি ফিরেই ক্লান্ত শরীর নিয়ে ধোয়া-মোছার কাজে লেগে পড়তে হবে না।
– ব্যাগ গোছানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, বাড়ি ফিরে পরিধানের জন্য পরিষ্কার কাপড় আছে কি না। এ ছাড়া পরনের কাপড় সব স্তূপ করে রেখে দিলে তা বাজে গন্ধ ছড়ায়। সেই সঙ্গে বদ্ধ ফাঁকা ঘরে এই গন্ধ অস্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টি করে। তাই এই সব ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে বাসা ছাড়ার আগেই কাপড়গুলো পরিষ্কার করা। নিদেনপক্ষে নিয়মিত পরিধানের কাপড়গুলো ধুয়ে শুকিয়ে আয়রন করে রাখতে হবে।
– বিছানার চাদর, জানালার পর্দা ও টেবিল ক্লথ অনেকদিন হয়ে গেলে দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং ঘরের পরিবেশ নষ্ট করে। আনন্দের ঈদ উদযাপন করে বাসায় ফিরে এমন অস্বস্তিকর পরিবেশের সম্মুখীন হওয়া কারোই কাম্য নয়। তাই এই চাদর-পর্দাসহ প্রতিটি আসবাবপত্র পরিষ্কারের দিকটি মাথায় রাখা উচিৎ।
– প্রতিটি কক্ষ পরিষ্কারের সময় বাথরুম পরিষ্কারে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বাথরুমে পানির কল চেক করে দেখার সময়েই এক সঙ্গে পরিচ্ছন্নতার দিকটাতেও নজর দেওয়া যেতে পারে।
– রান্নাঘরসহ প্রতিটি ঘরের ট্র্যাশ বক্সের সব ময়লা একটি পলিথিনে নিয়ে বাড়ির বাইরে যথাস্থানে ফেলে আসতে হবে।