ভূমিকম্পে দুই ফুট দেবে গেছে হিমালয়
সম্প্রতি নেপালে সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্পে হিমালয় পর্বতমালায় ভেতরেও তছনছ হয়েছিল। এর প্রভাব অবশ্য ভূপৃষ্ঠ পর্যন্ত এসে পৌঁছায়নি। সম্প্রতি বিজ্ঞানবিষয়ক পত্রিকা ‘নেচার’-এর লেখায় বিষয়টি উঠে এসেছে।
রাজধানী কাঠমান্ডুর ভূপৃষ্ঠ থেকে ১১ কিলোমিটার নিচে ভূকম্পনটি এসে থেমে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটটি ক্রমেই ইউরোশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের ওপর পড়লে আবারও ২৫ এপ্রিলের ভূমিকম্পের মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
পর্বতমালার নিচের ভূকম্পনের প্রভাব বিশ্লেষণ করতে গবেষকরা স্যাটেলাইট ডাটা ব্যবহার করেছেন। গবেষণায় বলা হয়েছে, ভূকম্পনের ফলে পাহাড়ের ৫ থেকে ১৫ কিলোমিটার গভীরে চ্যুতি (ফল্ট) সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে কাঠমান্ডু বেসিন এক মিটার ওপরে এবং হিমালয় উত্তরে দশমিক ৬ মিটার (প্রায় দুই ফুট) দেবে গেছে। তবে প্রধান ফল্টটি ভূপৃষ্ঠ পর্যন্ত পৌঁছায়নি।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী জে আর এলিয়ট ও আর জোলিভেটের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী গোর্খা ভূমিকম্পের ওপর সমীক্ষা পরিচালনা করেন। গত বছর ১ জুন সমীক্ষা প্রতিবেদন তাঁরা জমা দিলেও সম্প্রতি তা প্রকাশিত হয়েছে।
জে আর এলিয়ট বিবিসিকে বলেন, ‘এখনো এই ফল্টের অর্ধেক রয়েছে, যা কাঠমান্ডুর দক্ষিণে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘সাধারণত শতক ঘুরে ভূমিকম্প হয়। সম্ভবত এই নিয়ম আর থাকছে না, এবার স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ভূমিকম্প হবে। তবে এটা হবে ক্ষণস্থায়ী। আমাদের সমস্যা হলো এটা পূর্বাভাস করতে পারি না, আমরা কখনোই কোনো তারিখ দিতে পারব না।’
ওই বিজ্ঞানীর মতে, ফল্টের বাকি অংশ একবারে যদি ভূপৃষ্ঠ পর্যন্ত ভাঙত ভাঙতে উঠে আসে, এর ফলে ২৫ এপ্রিলের মতো ভূমিকম্প হবে। তিনি বলেন, ‘তবে তুলনামূলক গভীরতা হওয়ার কারণে তা হবে আরো বিধ্বংসী।’
গত বছর নেপালে সংঘটিত ভূমিকম্পে আট হাজার ৯৪০ জন নিহত হয়েছিল। নেপালের জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্রের হিসাবে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৬ মাত্রার আর মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮।