অবৈধ গ্যাস সংযোগ : সাভারে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে তিতাসের মামলা
সাভারে রাতের আঁধারে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সাভার তিতাস গ্যাস ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলীসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে সাভার মডেল থানায় কাউসার আলীসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর ধরে সাভারে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে প্রতি সপ্তাহে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন করে সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় করে এ সংযোগ বিছিন্নকরণে সুফল মিলছে না কোনোভাবেই। প্রতি সপ্তাহে সাভার তিতাস গ্যাস কতৃপক্ষ সাভারের বিভিন্ন গ্রামের বিভিন্ন বাসা-বাড়ির অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিছিন্ন করলেও রাতের আঁধারে সাভার তিতাস গ্যাস ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলীসহ একটি চক্র বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব অবৈধ সংযোগের কারণে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ও পোশাক কারখানার মালিকেরা গ্যাস সংকটে ভুগছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। পরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় রাতে সাভার তিতাস গ্যাস ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলী, গোলাম মোস্তফা কামাল, দেবাশীষ মোহন্ত ও ফোরকানের নামে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম।
সাভার তিতাস গ্যাস অফিস জানায়, তিতাস গ্যাসের সাভার জোনাল অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সঙ্গে যোগসাজশে তিতাস গ্যাস ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলী ও তাঁর চক্র দিনে বিচ্ছিন্ন অবৈধ গ্যাস সংযোগ রাতের আঁধারে পুনঃসংযোগ দিয়ে আসছে। শুধু তা-ই নয়, কাউসারের চক্রের বিরুদ্ধে সে সংযোগ থেকে মাসিক হারে বিল আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তারা গ্যাস অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করে থাকে। এসব কার্যকলাপের প্রতিবাদ করায় সাভার তিতাস গ্যাস অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনাও করা হয়।
চক্রের মাধ্যমে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়ায় কাউসার আলীর মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স প্রান্তিক গ্যাস কনস্ট্রাকশনকে তিতাস কর্তৃপক্ষ কালো তালিকাভুক্তও করে। অভিযোগ রয়েছে, কাউসার ও তাঁর চক্র গ্যাস অফিসের কর্মকর্তা পরিচয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতে বৈধ সংযোগ ব্যবহারকারীদেরও নানাভাবে হয়রানি করছে। বিভিন্ন এলাকায় ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে এসব অভিযোগ পাওয়া যায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ—এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে অনেক গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন ঠিকাদার কাউসার আলী।
সারা দেশে তিতাস গ্যাসের আবাসিক সংযোগ বন্ধ থাকলেও সাভারে ঠিকাদারকে টাকা দিলেই মিলছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। কর্তৃপক্ষের নজরদারির ঘাটতি এবং আইনের দুর্বলতার কারণে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারায় প্রতিনিয়ত অবৈধ সংযোগ দিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদার চক্র।
সাভার মডেল থানা পুলিশ বলছে, মামলার আসামিদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।