মিয়ানমারে পাচার হওয়া ১১ শিশু উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২
মিয়ানমারে পাচার হওয়া বান্দরবানের ১১ মেয়েশিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক বৌদ্ধ ভান্তেসহ দুই পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজ শনিবার ভোররাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা বান্দরবান গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে শিশুদের হস্তান্তর করেছেন।
এসব শিশুকে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাচার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন বৌদ্ধ ভান্তে উসিরি ভিক্ষু (২৩) এবং উচা থোয়াই (২৪)।
পুলিশ জানায়, রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার মিতিংঙ্গ্যাছড়ি বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ ভান্তে উসিরি ভিক্ষুসহ সংঘবদ্ধ একটি চক্র ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নেওয়ার কথা বলে ১৩ মেয়েশিশুকে মিয়ানমারের মংডু জেলার নাইসা ডং এলাকায় পাচার করে। এ ঘটনায় রোয়াংছড়ি থানায় একটি মামলা হয়। এরপর মিয়ানমার-বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বৌদ্ধভিক্ষুদের সহযোগিতায় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ দুদিন অভিযান চালিয়ে মিয়ানমারের নাইসা ডং বৌদ্ধ বিহার থেকে এই শিশুদের উদ্ধার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়। তবে এখনো দুই শিশুর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
অভিযানে সমন্বয়কারী কেপিএম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ হেমানন্দ ভিক্ষু বলেন, মিয়ানমারের মংডু জেলার নাইসা ডং বৌদ্ধ বিহারের প্রধান ভিক্ষু উ সারানা ভিক্ষুর সঙ্গে যোগাযোগ করে উভয়ের সম্মতিতে রোয়াংছড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া ১১ কিশোরীকে ফেরত আনতে গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারে যাই আমরা। মিয়ানমারের বৌদ্ধভিক্ষু এবং প্রশাসন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় দুদিনের প্রচেষ্টায় গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) নাইসা ডং বৌদ্ধ বিহার থেকে ১১ কিশোরীকে উদ্ধার করে উলাবুনিয়া বর্ডারে নিয়ে এসে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করে। আজ শনিবার ভোররাতে বিজিবি সদস্যরা বান্দরবান ডিবি পুলিশের কাছে শিশুদের হস্তান্তর করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম জানান, দুদিনের অভিযানে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় পাচার হওয়া ১১ মেয়েশিশুকে মিয়ানমার থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে আরো দুজনের কোনো খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় রাঙ্গামাটি থেকে উসিরি ভিক্ষু ও মিয়ানমার থেকে উচা থোয়াই নামে দুজন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অপর দুই শিশুকে উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে।
প্রসঙ্গত উসিরি ভিক্ষু আশ্রমে নেওয়ার কথা জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলা থেকে ১৪ মেয়েশিশুকে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার মিতিংঙ্গ্যা ছড়ি বৌদ্ধ বিহারে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নেওয়ার কথা বলে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৩ মেয়েশিশুকে মিয়ানমারে পাচার করে। আশ্রম থেকে এক শিশু পালিয়ে রোয়াংছড়ি উপজেলায় বাড়ি ফিরে ঘটনাটি অভিভাবকদের জানালে তাঁরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানান। জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় অভিভাবকরা রোয়াংছড়ি থানায় একটি মামলা করেন।