কিশোরগঞ্জে হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপি চাষে কৃষকদের ব্যাপক আগ্রহ
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় ক্রমেই বাড়ছে হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপির নতুন জাতের চাষাবাদ। রঙিন জাতের ফুলকপি বেশি উৎপাদনশীল, এসব ফুলকপির স্বাদ যেমন বেশি, তেমনি রয়েছে স্বাস্থ্যকর নানা গুণ, এমনকি ক্যানসাররোধী উপাদানও রয়েছে। তাছাড়া বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় এ জাতের কপি চাষ করে খুশি কৃষকরাও।
যেমনটা বলছিলেন ২০ শতাংশ জমিতে হলুদ জাতের ফুলকপি আবাদ করা পাকুন্দিয়ার বড় আজলদি গ্রামের কৃষক আবুল হাশিম। তিনি জানান, এই কপির ফলন ভালো, অল্প সময়ে উৎপন্ন হয়, স্বাদ ও বাজার দরও ভালো। তাই আগামী বছর আরও বেশি জমিতে এই কপি চাষ করবেন।
একই কথা বলছিলেন, বড় আজলদি গ্রামের আরেকজন কৃষক আকরাম হোসেন। তিনি জানান, সম্পূর্ণ বিষমুক্ত পদ্ধতিতে চাষ হওয়া হলুদ ফুলকপি সুস্বাদু, সাদা কপির তুলনায় ফলন বেশি হওয়ায় এবং এই ফুলকপি নিয়ে ক্রেতাদের চাহিদা থাকায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।
১৫ শতাংশ জমিতে বেগুনি রঙের ফুলকপি চাষ করা একই উপজেলার আঙ্গিয়াদি গ্রামের কিষাণী সালমা খাতুন জানান, আগে সাদা জাতের ফুলকপির তেমন দাম পাইনি। বর্তমান বাজারে একটি সাদা কপি যেখানে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সেখানে বেগুনি কপি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে। ক্রেতারা জমি থেকেই কিনে নিয়ে যায় বলে তারা আনন্দিত।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুস সাত্তার জানান, গত মৌসুমে পাকুন্দিয়া উপজেলায় যেখানে মাত্র ৩৩ শতাংশ জমিতে রঙিন জাতের ফুলকপি চাষ হয়েছিল, সেখানে এবার চাষ হয়েছে ২০ গুণ বেশি, অর্থাৎ ৬৬০ শতাংশ জমিতে। কোনরকম কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই চাষ করা এ জাতের কপিতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, এন্টি অক্সিজেন, অ্যান্থসায়োনিন, পর্যাপ্ত আঁশ ও ক্যানসার রোধক উপাদান। এসব গুণের পাশাপাশি খেতে সুস্বাদু হওয়ায় রঙিন জাতের ফুলকপি নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে মানুষের মাঝে। এর ফলে বাজারদর বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকদের মাঝেও রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে।
পাকুন্দিয়া উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিম উল হক সোহাগ জানান, পাকুন্দিয়ায় রঙিন জাতের ফুলকপি চাষে কৃষি বিভাগ কৃষকদেরকে বীজ সরবরাহ ও পরামর্শ প্রদানসহ সার্বিকভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে।
প্রয়োজনীয় সরকারি সহায়তা পেলে এ অঞ্চলের আরও কৃষক রঙিন জাতের ফুলকপি চাষ করতে আগ্রহী হবেন এবং আর্থিকভাবে লাভবান হবেন বলে মনে করছেন পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু।