কেরালায় ভূমিধসে নিহত বেড়ে ১৬৩, এখনও আটকে শতাধিক
ভারতের কেরালার ওয়ানাড়ে ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮৬ জন আহত হয়েছে। আজ বুধবার (৩১ জুলাই) দেশটির কর্মকর্তারা বলেছে, এখনও কয়েকশ মানুষ আটকে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। টানা বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার কাজ।
ভারতীয় সেনা, বিমান বাহিনী, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ মিলে ওয়ানাড়ের ওই স্থানে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। গত মঙ্গলবার মেপ্পাডির পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টির পর ব্যাপক ধস নামে। সেই ধসের কারণে বহু বাড়ি ভেঙে পড়েছে। গাড়ি ভেসে গেছে। বিস্তীর্ণ এলাকায় গাছপালা, রাস্তাঘাট, সেতু ধ্বংস হয়েছে। চারদিকে কাদামাটির স্রোত বইছে। এ পর্যন্ত উদ্ধারকারীরা প্রায় এক হাজার জনকে উদ্ধার করেছেন।
ভারতীয় সেনা উদ্ধারের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। এনডিআরএফ, সরকারি প্রশাসন, রাজ্যের উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রায় তিনশজন সেনা উদ্ধারের কাজ চালাবেন। আরও ১৪০ জনকে স্ট্যান্ড বাই হিসেবে রাখা হয়েছে। একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেতু নতুন করে গড়ে তুলবে সেনার বিশেষ দল। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টা নাগাদ সেনার দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই অফিসার আকাশপথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন। তারপর তারা প্রশাসনের সঙ্গে বসে আলোচনা করে পরবর্তী পরিকল্পনা চূড়ান্ত করবেন। কোঝিকোড়ে সেনা একটি কম্যান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টার গড়ে তুলেছে।
এ ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ বলেছেন, তিনি বুধবার দুর্গত এলাকায় যাবেন। রাজ্য সরকার ইতোমধ্যে ৪৫টি ত্রাণশিবির তৈরি করেছে। সেখানে তিন হাজার ৬৯ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
দেশটির আবহাওয়া কার্যালয় জানিয়েছে, ওয়ানাড় ও উত্তর কেরালায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। কেরালায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। উপদ্রুত এলাকায় সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। মোট ১১টি জেলায় স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী সি এম বিজয়ন জানিয়েছেন, খুব দরকার না হলে কেউ যেন ওয়ানাড় না যান। দুইদিনের সরকারি শোক ঘোষণাও করেছেন। এই সময় কেরালায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। কোনো সরকারি উৎসব বা উদযাপন হবে না।
কেরালা ব্যাংক ইতোমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণতহবিলে ৫০ লাখ টাকা দিয়েছে। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী দুই কোটি ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পাঁচ কোটি টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
ওয়ানাড়ের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলীয়নেতা রাহুল গান্ধী আজ বুধবার ওয়ানাড় যেতে চেয়েছিলেন। রাহুল বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছেন, ওয়ানাড়ে আবহাওয়া খুবই খারাপ। সমানে বৃষ্টি হচ্ছে। এই অবস্থায় ওয়ানাড় যাওয়া সম্ভব হবে না।’
রাহুল বলেন, ‘আমি ওয়ানাড়ের মানুষকে জানাতে চাই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি সেখানে যাব। ইতোমধ্যে আমি পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি এবং যতটা সম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করছি। এই কঠিন সময়ে আমি ওয়ানাড়ের মানুষের পাশে আছি।’