বেনাপোলে ভ্রমণকরের রশিদ জাল করে রাজস্ব ফাঁকি
বেনাপোল আন্তর্জাতিক কাস্টমস চেকপোস্টে ভ্রমণকরের রশিদ জাল করে সরকারের লাখ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। চেকপোস্ট কেন্দ্রিক গড়ে ওঠা একটি চক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে প্রকাশ্যে। ভ্রমণ ট্যাক্স রশিদ জাল করে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। আনলাইনে সবচেয়ে বেশী জাল করা হচ্ছে ভ্রমণ ট্যাক্স।
গত রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাল ভ্রমণকরের মাধ্যমে বেশ কয়েকজন যাত্রী পার করার সময় রশিদসহ আনিছুর রহমান নামে এক দালালকে আটক করে কাস্টমস কর্মকর্তারা। ভারতগামী যাত্রী রেখা শীল (পাসপোর্ট নম্বর-এ-০০৮৯৩৭৪২) কে দ্রুত ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস পার করে দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা আদায় করেন দালাল আনিছুর। সে ভ্রমণকরের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে অন্য এক যাত্রীর ভ্রমণকরের রশিদ রেখা রানীর পাসপোর্টে সেঁটে দেন। পরে ঐ যাত্রীকে পার করার সময় কাস্টমস কর্মকর্তারা হাতেনাতে যাত্রীসহ আনিছুরকে আটক করেন। খবর পেয়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তার অনুসারীরা তাকে ছাড়িয়ে আনে। পরে ঐ যাত্রীকে নতুন করে ট্যাক্সের টাকা জমা দিতে হয়। আনিছুর বেনাপোলের দিঘীরপাড় গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্র জানায়, আনিছুর দীর্ঘদিন ধরে জাল ভ্রমণকরের টাকা ফাঁকি দিয়ে আসছে। প্রতিদিন আনিছুরকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসে অবাধে প্রবেশ করে ভ্রমণকরের জাল রশিদের মাধ্যমে সরকারের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। শুধু তাই নয় প্রতিদিন বড়বড় চোরাচালানীদের ব্যাগেজ পার করে থাকে আনিসুর রহমান। প্রতি ব্যাগেজ ৫-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত চুক্তিতে ব্যাগেজ পার করে সরকারের লাখ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে।
বেনাপোল কাস্টমস চেকপোস্টের রাজস্ব কর্মকর্তা কামরুন্নাহার জানান, জাল ভ্রমণকরসহ একজন দালাল ও পাসপোর্ট যাত্রীকে আটক করা হয়। পরে ঐ যাত্রীকে নতুন করে ভ্রমণকরের রশিদ কাটিয়ে ভারতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। আমরা এসব বিষয়ে জিরো টলারেন্সে কাজ করছি। কাস্টমস এলাকাকে দালালমুক্ত করতে তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ হোসেন জানান, আমি নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। তবে আমরা শুনেছি জাল ভ্রমণকরের মাধ্যমে দালালসহ এক যাত্রীকে আটক করা হয়েছিল। পরে নতুন করে ভ্রমণকরের রশিদ কাটিয়ে যাত্রীকে ছেড়ে দওয়া হয়।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক মো. সজিব নাজির জানান, দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল চেকপোস্টে ভ্রমণকর জালিয়াতির একটি শক্তিশালী চক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। এ ধরনের একটি গোপন সংবাদ আমাদের কাছে আছে। কিন্তু বিষয়টি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব, আমাদের নয়।
উল্লেখ্য, ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীদের ভ্রমণকর চেকিংয়ের কোনো কার্যক্রম নেই। কাস্টমসের পক্ষ থেকে প্রতিটি পাসপোর্ট যাত্রীর ভ্রমণকর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাটা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না।