শনাক্ত হলেও লাশ নেবে না সাব্বিরের পরিবার : এসপি
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/07/27/photo-1469625737.jpg)
রাজধানীর কল্যাণপুরে পুলিশ ও সোয়াতের অভিযানে নিহত ‘জঙ্গি’ সাব্বিরুল হক কনিকের পরিচয় নিয়ে এখনো সন্দেহ রয়েছে তাঁর পরিবারের। লাশ দেখেই তাঁর সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন সাব্বিরের বাবা আজিজুল হক চৌধুরী।
আজ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা। তিনি বলেন, নিহতের ছবি দেখে আজিজুল হকের কিছুটা সন্দেহ রয়েছে। তাই লাশ দেখেই শনাক্ত করবেন তিনি। যদি লাশটি তাঁর ছেলের বলে শনাক্ত হয় তাহলে সেই লাশ গ্রহণ করবেন না বলেও পুলিশকে জানিয়েছেন আজিজুল হক। সেই সঙ্গে পুলিশের মাধ্যমে গোটা জাতির কাছে ক্ষমাও চাইবেন তিনি।
নূরে আলম মিনা বলেন, প্রাথমিকভাবে সাব্বির হিসেবে চিহ্ণিত জঙ্গির ছবি তাঁর বাবা-মাকে ভালোভাবে দেখানো হয়েছে। বিশেষ করে চোখের ছবি বড় করে দেখানো হয়েছে। সেই ছবি দেখেই কিছুটা সন্দেহ তৈরি হয় পরিবারের। সে জন্যই তাঁরা সরাসরি লাশ দেখে তাঁদের ছেলে কি না, তা শনাক্ত করবেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে আরো জানানো হয়, চার মাস ধরে নিখোঁজ আনোয়ারার বরুমছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হকের ছেলে সাব্বিরুল হক কনিক। তবে সম্মানের কথা ভেবে থানায় জানায়নি পরিবার।
চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় চৌধুরী ভবনের চারতলায় এক বছর আগে ভাড়াটিয়া হিসেবে ওঠেন আজিজুল হক। তবে সেই বাসায় গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবারই বাসায় তালা দিয়ে চলে গেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর কর্মকর্তা আজিজুল হকের দুই ছেলে, এক মেয়ের মধ্যে সাব্বির সবার বড়। চার মাস আগে সাব্বির রাউজানে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এর পর থেকেই তিনি নিখোঁজ।
সাব্বিরুল হক কনিক চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ২০১০ সালে সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০১২ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।
গত সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে কল্যাণপুরের ৫ নম্বর রোডে ‘জাহাজ বিল্ডিং’ নামে পরিচিত সাততলা ভবনটিতে অভিযানে যান পুলিশ সদস্যরা। এ সময় ভবনের পঞ্চম তলা থেকে জঙ্গিরা ককটেল ছোড়ে। পরে ভবনটির আশপাশের এলাকা ঘিরে ফেলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
জাহাজ বিল্ডিংয়ের পাশের ভবনগুলোর ছাদে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনাস্থলের আশপাশের সবকটি সংযোগ সড়কেও ব্যারিকেড দেয় পুলিশ।
রাতভর পরিকল্পনার পর গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৫টা ৫১ মিনিটে শুরু হয় ‘অপারেশন স্টর্ম টোয়েন্টিসিক্স’। ঘণ্টাখানেক মুহুর্মুহু গুলির শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেন। অভিযান শেষে ঘটনাস্থল থেকে নয় ‘জঙ্গি’র লাশ উদ্ধার করা হয়।