কী উত্তর দেবেন সোনু?
আজান নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার পর ভারতীয় গায়ক সোনু নিগমকে নিয়ে দেশটিতে এখন আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। সোনুর ওই মন্তব্য ঘিরে বিভক্ত হয়েছে বলিউডপাড়াও। অনেকেই সোনুর পক্ষে কথা বললেও বেশিরভাগই ছিলেন তাঁর বিপক্ষে।
সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে তারকাদের পাশাপাশি আজান বিতর্কে নিজ নিজ মতামত-মন্তব্য-প্রশ্ন তুলে ধরেছেন সাধারণ মানুষও। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন ইয়াসমিন আরা মুন্সি নামের এক তরুণী। তিনি একজন নারী সমাজকর্মী।
ইয়াসমিন ফেসবুকে একটি ভিডিওতে প্রশ্ন করেন, ‘গরু রক্ষার নামে যখন মুসলিমদের হত্যা করা হয়, তখন কেন আপনি টুইটারে লেখেন না?’
ইয়াসমিন আরো বলেন, ‘সোনু নিগমের বয়স নিশ্চয়ই ৫০ পার হয়েছে। তিনি এত দিন কেন আজান শুনে বিরক্ত হলেন না? বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরই কেন তিনি এ বিষয়ে কথা বললেন?’
ওই ফেসবুক পোস্টে ইয়াসমিন বলেন, ‘সোনু নিগমকে ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতে হবে। কাউকে খুশি করার জন্য নয়।’
গত সোমবার টুইটারে সোনু লেখেন, ‘সৃষ্টিকর্তা সবার ভালো করুন। আমি মুসলিম না, তা-ও আমাকে আজান শুনে ঘুম থেকে উঠতে হয়। ভারতে কবে এই জোর করে চাপিয়ে দেওয়া ধর্মভার শেষ হবে।’
আরেকটি পোস্টে সোনু লেখেন, ‘মুহাম্মদ (সা.) যখন ইসলাম তৈরি করেছিলেন, তখন তো বিদ্যুৎ ছিল না। তাহলে এডিসনের পর থেকে কেন আমাদের এই কর্কশ শব্দ সহ্য করতে হবে?’
এরপর সোনু আবার টুইট করেন, ‘যে ওই ধর্মের অনুসারী না, তাকে ঘুম থেকে জাগানোর জন্য আমি কোনো মন্দির বা গুরুদুয়ারায় বিদ্যুৎ ব্যবহারে বিশ্বাসী নই।’
সোনু নিগমের ওই মন্তব্যের পরপরই ভারতজুড়ে ক্ষোভ ও সমালোচনা শুরু হয়। এর পরপরই আজানের পক্ষে নিজেদের অনুভূতির জানান বলিউডের কয়েকজন তারকা।
সোনুর টুইটের একদিন পর আরেক টুইটে বলিউডের আলোচিত নির্মাতা মহেশ ভাটের মেয়ে পূজা বলেন, ‘বান্দ্রার সুনসান গলিতে গির্জার ঘণ্টা ও আজান শুনে আমি প্রতি সকালে জেগে উঠি। আমি আগরবাতি জ্বালাই এবং ভারতের চেতনাকে স্যালুট করি।’
এর আগে এক টুইটে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন, ‘প্রতি সন্ধ্যায় আমি আজানের জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি। কোনো দিনই আমি আজান না শুনে থাকতে পারি না। কারণ, আজানে আছে একটা স্বর্গীয় সৌন্দর্য।’
বলিউডের এই অভিনেত্রী আরো বলেন, ‘ভোপালে সবচেয়ে আনন্দের ক্ষণটা আমার কাছে ছিল আজানের সময়, যেটার জন্য আমি আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি। সন্ধ্যায় আমি বারান্দায় বসি। কাজ শেষ হয়ে যায়। পুরো ভোপালে সব মসজিদ থেকে আজানের সুর আসে। আমার বারান্দায় বসে ছয়টি মসজিদ থেকে আজান শোনা যায়।’
‘ওই পাঁচ মিনিট আমার কাছে খুব ভালো লাগে। সূর্য ডুবতে থাকে। তখন আজানের সুর ভেসে আসে। তখন বেশ শান্তির একটা পরিবেশ তৈরি হয়। ওইটাই আমার দিনের সবচেয়ে প্রিয় সময়।’