থাইল্যান্ডে গণকবর : গ্রেপ্তার ৪, কাল উপকূলে অভিযান
থাইল্যান্ডে মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। একই সঙ্গে আরো চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আজ সোমবার ব্যাংককপোস্ট, ফুকেটওয়ানসহ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
আগামীকাল মঙ্গলবার থাইল্যান্ড কর্তৃপক্ষ আরো মৃতদেহের সন্ধানে আন্দামান সাগরের উপকূলে অভিযান পরিচালনা করবে।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন শংখলা প্রদেশের পাদাং বেসার পৌরসভার কাউন্সিলর আসান ইথাথানু (৪৮), বান তালো গ্রামের সহকারী হেডম্যান রর-আই সন্যালে (৪১) , হেডম্যানের সহকারী আলি লামোহ (৪৭) ও মিয়ানমারের নাগরিক সনিয়াং আনু (৪০)।
জালিয়াতি ও রোহিঙ্গাদের মুক্তিপণের বিনিময়ে অপহরণের আরেকটি মামলায় নাখোন সি থামারাত প্রদেশ থেকে সনিয়াং আনুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার চারজনের বিরুদ্ধে মানবপাচার, বন্দি রাখা ও মুক্তিপণের জন্য অপহরণের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
যে চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তাঁরা হলেন পেদাং বাসার পৌরসভার ডেপুটি মেয়র প্রসিত লামলেহ, বান তালো গ্রামের প্রধান ইয়ালি খ্রেম, পাকাপল বেনলাটেহ ও চারোয়েন থংটায়েং।
আজ সোমবার থাইল্যান্ডের জাতীয় পুলিশপ্রধান সোমিয়াত পুম্পুনমুয়াং ব্যাংকক পোস্টকে বলেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে।' তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী (জেনারেল প্রয়ুত চান-ও-চা) এইমাত্র আমাকে আবারও ফোন দিয়ে বিষয়টি তত্ত্বাবধান করতে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এই ইস্যুটি দেশের জন্য ভয়াবহ সমস্যা সৃষ্টি করছে।'
ফুকেটওয়ান জানিয়েছে, পাচারকারীরা থাইল্যান্ডের জঙ্গলে নির্মিত অস্থায়ী ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বা বাংলাদেশি নাগরিকদের আটকে রাখত। বড় নৌযানে করে ৫০ থেকে ৮০ জনের একটি দলকে বন্দি করে পাচার করা হতো, যাদের প্রত্যেকের কব্জিতে রঙিন ফিতা বেঁধে আন্দামানে ছেড়ে দেওয়া, এই ফিতার মাধ্যমেই বোঝা যেত তারা কোন পাচারকারীর সম্পদ।
জীবিত উদ্ধার হওয়া অনেকেই জানিয়েছে, বহু মানুষকে গুলি করে বা পালানোর চেষ্টা করলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মাথাপিছু ৬০ হাজার থাই বাত (দুই হাজার মার্কিন ডলার) মুক্তিপণ দাবি করা হতো।
মালয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী থাইল্যান্ডের শংখলা প্রদেশে মাত্র একটি ক্যাম্পে ২৬টি মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ১০ বাংলাদেশি রয়েছে। এ ছাড়া আনুজার নামের জীবিত এক বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁকে দীর্ঘ নয় মাস থাইল্যান্ডের জঙ্গলে আটকে রাখা হয়েছিল বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।