মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মুরসির মৃত্যুদণ্ড
মিসরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিসহ শতাধিক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। দেশটিতে ২০১১ সালের অভ্যুত্থানে কারাগার ভেঙে বেরিয়ে যাওয়ার দায়ে আজ শনিবার তাঁকে এ সাজা দেওয়া হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, আজকের রায়ে সাজাপ্রাপ্ত অনেকেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। এঁদের মধ্যে কাতারে অবস্থান করা ইসলামী চিন্তাবিদ ইউসুফ আল-কারজাভীও আছেন। এ সাজা ঘোষণার সময় একটি কামরায় বসা মুরসিকে বেশ উত্তেজিত অবস্থায় দেখা যায়।
মিসরে প্রাথমিকভাবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর এ বিষয়ে প্রধান মুফতির অনুমোদন নিতে হয়। এর পরের শুনানিতে চূড়ান্ত মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। তাই মুরসিসহ অন্যদের সাজার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে অপেক্ষা করতে হবে ২ জুন পর্যন্ত।
মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থিত দল ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির এই নেতা ২০১৩ সালের জুলাইয়ে ক্ষমতাচ্যুত হন। এর পর থেকে মিসর শাসন করছেন সেনাশাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। তাঁর পতনের পর থেকে মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক নিপীড়ন চালায় সরকার। এতে কয়েকশ লোক নিহত হয়। কারাবন্দী করা হয়েছে ব্রাডারহুডের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে।
মিসরের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট সিসি আদালতকে নিপীড়নের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন।
২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানির দায়ে এপ্রিলে মুরসিকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়কে ‘বিচারের জন্য পরিহাসজনক’ বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
২০১১ সালে শুরু হওয়া মোবারকবিরোধী অভ্যুত্থানে সাড়ে ৮৫০ জনের মতো লোক নিহত হয়। বিক্ষোভের চার বছর পর মিসরের অস্থিরতার জন্য মুসলিম ব্রাদারহুডকে দায়ী করা হয়।
মোবারকের পতনের পর ২০১২ সালের মে মাসে মিসরে ক্ষমতাসীন হয় ব্রাদারহুড। কিন্তু বছরখানেক পরই তাদের উৎখাত করেন সিসি।
৮৭ বছর বয়সী সংগঠনটিকে নির্মূলের অঙ্গীকারও করেছেন তিনি। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবেও ঘোষণা করে মিসর।