স্বপ্ন বোনে শ্রম-সংহতির মহান মে দিবস
১ মে, শ্রমজীবী মানুষের জন্য গৌরবময়, স্মরণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ দিন। যদিও প্রেক্ষাপট ছিল বেদনার, কিন্তু এখন তা সম্মানের ইতিহাস। এখন থেকে ১৩৭ বছর আগে, অর্থাৎ ১৮৮৬ সালে জ্বলে উঠেছিল যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেট। শ্রমিকরা দাবি তুলেছিলেন ন্যায্য মজুরি ও আট ঘণ্টা কর্ম-সময়ের। সেদিন আন্দোলনরত শ্রমিকের ওপর পুলিশের গুলি জাগিয়ে তুলেছিল পৃথিবীর চোখ। যদিও তার আগেই সেই হে মার্কেটে ঢলে পড়েছিল ১০ শ্রমিকের প্রাণ। আজ সেই মহান মে দিবস। এই মহান দিনটিতে দাঁড়িয়ে কিছু প্রশ্ন আজও শ্রমিকমনে ঘোরেফেরে, বিঁধে থাকে; আবার স্বপ্ন বোনে, স্বপ্ন দেখায়, স্বপ্নে ভাসায়। তাই দিনটির অর্জন সুখানন্দে ভাসায় আমাদের।
১৮৮৯ সাল প্যারিসে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক কনভেনশনে ১ মে’তে ‘মে দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত হয়। এই দিনটিকে সাড়ম্বরে পালনের পাশাপশি থাকে সরকারি ছুটি। যদিও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা সময় দেখা দেয় অস্থিরতা, নানা দাবিতে শ্রমিক আন্দোলন আজও অব্যাহত। বিভিন্ন ঘটনা ও দুর্ঘটনায় প্রাণ যাচ্ছে শ্রমিকের। খবরে-খবরে ভাসে ন্যায্য মজুরি না পাওয়ার তথ্য। কারণ, আন্তর্জাতিকভাবে শ্রমিকের মৌলিক অধিকার স্বীকৃত হলেও কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানমালিক আজও থেকে গেছেন সেই ১৮৮৬’র শোষক-মানসিকতায়। আর আছে, ট্রেড ইউনিয়নগুলোর কাজের পেছনে কাজের দুর্বোধ্যতা।
যদিও সময় বদলেছে, বদলাচ্ছে। শিল্প বিকাশের স্বার্থে দেশ ও জাতীয় অর্থনীতির অগ্রগতি জন্য বেতন কাঠামো প্রতিটি স্তরে বাস্তবায়ন খুবই দরকার। মে দিবস উদযাপনের পাশাপাশি এই দিকটি আমাদের মনে গেঁথে নেওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।
লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির সেই প্রার্থনাই যেন মনে পড়ে বারবার। তিনি বলেছিলেন, ‘হে ঈশ্বর, তুমি আমাদের সমস্ত ভাল জিনিস শ্রমের দামে বিক্রি করে দাও।’
লেখক : কবি ও প্রাবন্ধিক