সাকিবদের লজ্জায় ডোবালেন আমলা-ডি কক

সীমিত ওভারের ক্রিকেট এখন এতটাই বদলে গেছে যে, কোনো দল যত বেশি রানই করুক না কেন সেটা টপকে যাওয়ার সামর্থ্য রাখে প্রতিপক্ষ। তিনশর অধিক রান করাটা এখন মামুলি বিষয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। এমনকি কোনো উইকেট না হারিয়ে দুইশ-আড়াইশ রান তাড়া করাটাও এখন নৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি আরেকবার প্রমাণ করল দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশের দেওয়া ২৭৮ রান তাড়া করতে দলটি একটিও উইকেট হারায়নি। ওয়ানডে ইতিহাসে এত বেশি রান করে ১০ উইকেটে হারের নজির আর একটিও নেই। সপ্তম দল হিসেবে ২০০ রানের বেশি করে ১০ উইকেটে হারল বাংলাদেশ।
১৯৮৩ সালে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১৭২ রান বিনা উইকেটেই তুলে নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেবার বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে ওয়ানডে ক্রিকেট শুরুর পর এত বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আর একটিও ছিল না। এরপর থেকেই গ্রডন গ্রিনিজ ও ডেসমন্স হেইন্সকে বিশ্বের সেরা উদ্বোধনী জুটি মনে করা হয়। চার বছর পর নিজেদের রেকর্ড ভাঙে ওয়েস্ট ইন্ডিজই। পাকিস্তানের দেওয়া ১৯২ রান অবলীলায় তাড়া করেন হেইন্স ও বাচ্চুস। ওয়ানডেতে ২০০ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটাও ক্যারিবীয়দের। ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের দেওয়া ২২১ রান কোনো উইকেট না হারিয়েই তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবারও ঘটনার সাক্ষী হেইন্স। সেবার অবশ্য ব্রায়ান লারা আহত হয়ে মাঠ থেকে চলে যান।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ১০ উইকেটে জয়ের ঘটনাও বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে রানের ব্যবধানটাও বাড়ে। ২০১৬ সালে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৫৫ রান কোনো উইকেট না হারিয়েই তুলে নেন জেসন রয় ও অ্যালেক্স হেলস। গতকাল পর্যন্ত ওটিই বিশ্ব রেকর্ড হয়ে ছিল। তবে আজ রেকর্ডটা ভেঙে দিলেন হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক। ২৮২ রান করে তারা সরিয়ে দিলেন হেলস ও রয়কে। সঙ্গে বা্ংলাদেশকে ১১তম বার ১০ উইকেটে হারের লজ্জা দিলেন এই দুই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। ক্রিকেট বিশ্বে এত বেশিবার ১০ উইকেটে হারের রেকর্ড নেই আর কোনো দেশের। জিম্বাবুয়ে এমন লজ্জা পেয়েছে সাতবার। শ্রীলঙ্কা পাঁচ, ভারত, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ চারবার করে এমন লজ্জা পেয়েছে। পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড তিনবার করে ১০ উইকেটে হারের স্বাদ গ্রহণ করেছে। অস্ট্রেলিয়া মাত্র একবার ১০ উইকেটে হেরেছে।
প্রতিপক্ষকে সবচেয়ে বেশিবার ১০ উইকেটে হারের লজ্জা দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একটা সময় ক্রিকেট রাজত্ব করা দলটি ১০ বার প্রতিপক্ষকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে। দ্বিতীয় স্থারে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তারা সাতবার বিপক্ষ দলের বিপক্ষে ১০ উইকেটে জয় পেয়েছে। এরপর রয়েছে ভারত। তারা ছয়বার প্রতিপক্ষকে এমন লজ্জায় ডুবিয়েছে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে সবোর্চ্চ রানের জুটিটা ছিল ২২৫ রানের। ১৯৯৭ সালে উদ্বোধনী জুটিতে ২২৫ রান করেন কেনিয়ান ওপেনার দিপক চুদাসামা (১২২) ও কেনেডি ওটিয়ানো (১৪৪)। এরপর ২০১০ সালের বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম উইকেট জুটিতে ২১৫ রান তুলেছিলেন উপুল থারাঙ্গা ও মাহেলা জয়াবর্ধনে। ২০০৮ সালে টাইগারদের বিপক্ষে ২০১ রানের জুটি বেঁধেছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা ও সনৎ জয়সুরিয়া। সব রেকর্ডই হয় প্রথম ইনিংসে। এই প্রথম বাংলাদেশের বিপক্ষে তাড়া করতে নেমে ২০০ রানের বেশি তুললেন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা।