বিদায় বলে দিলেন কাকা

হয়তো রোনালদিনহো বা রোনালদোর মতো নন, এমনকি নেইমারের মতো অতটা প্রতিভাবানও নন কাকা। তারপরও ফুটবল বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবল-বিস্ময় মনে করা হয় তাঁকে। যখন শুরুটা করেছিলেন, অনেকে তাঁর মধ্যে পেলের ছবি দেখতে পাচ্ছিলেন। এমনকি গ্যারিঞ্চা, সক্রেটিস বা রোমারিওর সঙ্গে তাঁর তুলনা চলছিল। বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোতে খেলেছেন, তবে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো হারিয়ে ফেলেছেন সর্বনাশা ইনজুরির কারণে। এরপর আর সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি কাকা। শেষ পর্যন্ত আমেরিকার মেজর লিগে নিজের নাম লেখান। সোমবার সেখান থেকেই অবসরে গেলেন ব্রাজিলের অন্যতম সেরা এই তারকা ফুটবলার।
সোমবার মেজর লিগ সকারের ক্লাব অরল্যান্ডো সিটির হয়ে শেষবারের মতো মাঠে নামেন কাকা। অরল্যান্ডোর হাজার পঞ্চাশেক দর্শক অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায় দিলেন ক্লাবের সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকাকে। তবে শেষ ম্যাচে দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। কলম্বাসের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরেছে অরল্যান্ডো সিটি। তবে জয়-পরাজয় ছাপিয়ে এদিন মূল আকর্ষণ ছিলেন কাকা। খেলা শুরুর আগেই তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে যায় অরল্যান্ডোর মাঠ। ম্যাচ শুরুর আগে দলের সংগীত গাওয়ার সময়ই কেঁদে ফেলেন কাকা। তাঁর সঙ্গে কেঁদেছে পুরো স্টেডিয়াম। দল হারলেও ম্যাচ শেষে বীরের সম্মান পেয়েছেন এই ফুটবলার। ২০১৫ সালে অরল্যান্ডো সিটিতে যোগ দেন তিনি।
২০০১ সালে ব্রাজিলের ক্লাব সাও পাওলোতে সিনিয়র ক্যারিয়ার শুরু করেন কাকা। এখানে ১২৫ ম্যাচে ৪৭ গোল করে সবার নজরে আসেন তিনি। ২০০৩-০৪ মৌসুমে ইতালির ক্লাব এসি মিলান দলে ভেড়ায় তাঁকে। ক্যারিয়ারের স্বর্ণসময়টা এখানেই কাটিয়েছেন তিনি। পাঁচ মৌসুমে ৯৫ গোল করে রিয়াল মাদ্রিদের নজরে পড়েন কাকা। এরপর চার বছর খেলেন স্পেনে। তবে ইনজুরির কারণে লস ব্লাঙ্কোস শিবিরে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। ২০১৩-১৪ মৌসুমে ধারে খেলতে যান এসি মিলানে। সেখানেও নিষ্প্রভ ছিলেন কাকা। ৩৯ ম্যাচে করেন ৯ গোল।
২০১৪ সালে আবার ব্রাজিলের সাও পাওলোতে ফিরে যান কাকা। পরের বছর মেজর লিগের দল অরল্যান্ডো সিটিতে নাম লেখান। প্রায় তিন মৌসুম শেষে এখান থেকেও বিদায় নিলেন সেলেসাওদের এই ফুটবল-বিস্ময়। ব্রাজিলের হয়ে এক যুগের ক্যারিয়ারে ৯২ ম্যাচে করেছেন ২৯টি গোল। আর ক্লাব ফুটবলে ৬৪৬ ম্যাচে কাকার গোলসংখ্যা ২০৬টি।