বার্সা ছেড়ে চাইনিজ ক্লাবে যাচ্ছেন মাশ্চেরানো

ন্যু ক্যাম্পে কুতিনহো ও ইয়ারি মিনার আগমনে সমর্থকেরা উচ্ছ্বাসে ভাসলেও মাশ্চেরানোর বিদায় আনন্দটাকে মাটি করে দিয়েছে। দীর্ঘ সাত বছর বার্সেলোনার ছায়ায় কাটানোর পর অবশেষে ট্যাকেল মাস্টার পাড়ি জমাতে চলছেন চাইনিজ ক্লাব হেবেই চায়না ফরচুনে। স্প্যানিশ গণমাধ্যম তেমনটাই দাবি করছে।
২০১০ বিশ্বকাপের পর সামার ট্রান্সফারে লিভারপুল থেকে হাভিয়ের মাশ্চেরানোকে নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হয় বার্সা। ২৫ মিলিয়ন ট্রান্সফার ফিতে লিভারপুল ছেড়ে সে বছর আগস্টে কাতালান ক্লাবটি যোগ দেন এই আর্জেন্টাইন।
লিভারপুলে তিন বছর কাটানোর আগে মাশ্চেরানোর ফুটবল ক্যারিয়ারের শুরু বুয়েন্স এইরেসের ক্লাব রিভার প্লেটের হয়ে। এরপর ব্রাজিলিয়ান ক্লাব করিন্থিয়াসের পরবর্তীতে ওয়েস্টহ্যাম।
রিভার প্লেট থেকে বার্সেলোনায় আসা পর্যন্ত সময়টা ছিল ঘটনা বহুল। কখনো ট্রান্সফার, কখনো প্রকৃত ট্রান্সফার ফি এসব নিয়ে বারবারই মিডিয়ায় উচ্চারিত হয়েছিল এই আর্জেন্টাইনের নাম। কাতালান ক্লাবটির হয়ে ১৮টি শিরোপা জেতা মাশ্চেরানো বার্সায় এসে হয়ে ছিলেন পুরো দস্তুর নিভৃতচারী। ক্লাবের সাফল্যের বড় অংশ জুড়ে ছিলেন তিনি, কিন্তু দলের অন্য সদস্যদের মত মিডিয়ার প্রচারনার অনেকটাই বাইরে ছিলেন। বার্সায় সাত বছরের ক্যারিয়ারে পেনাল্টি থেকে নিজে মাত্র এক গোল করলেও মাঠে মাশ্চেরানোকে আলাদা করে তোলে যেই ব্যাপারটা সেটা হল সতীর্থরা গোল করলে মাশ্চেরানো ছুটে যান কোচের কাছে। কোচের কাছে থেকে নেন পরবর্তী নির্দেশনা। এই দৃশ্যটা বছরের পর বছর কাতালান দর্শকরা দেখে আসলেও আগামীতে এই সুন্দর দৃশ্যটা দেখার সুযোগ হবে না।
মাঠে মাশ্চেরানোর সবচেয়ে শক্তির জায়গা তাঁর দারুণ নেতৃত্বগুণ, পজেশন সেন্স এবং দ্রুত ম্যাচ বোঝা। শেষ বেলায় খেলোয়াড় হিসেবে যখন ন্যু ক্যাম্পকে বিদায় জানাচ্ছেন তখন অর্জনের তালিকায় যোগ হয়েছে ২টি চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি, চারটি লিগ শিরোপা, চারটি কোপা দেল রে, চারটি স্প্যানিশ সুপার কাপ, দুটি ইউরোপিয়ান সুপার কাপ এবং দুটি ক্লাব বিশ্বকাপ। মাশ্চেরানো যখন প্রথমবার বার্সার জার্সি গায়ে জড়িয়ে ছিলেন তখন তাঁর মাথা ভর্তি চুল, শেষ বেলায় যখন ফিরে যাচ্ছেন তখন চুল না থাকলেও একগাদা সাফল্যের অদৃশ্য মূকুট মাথায় নিয়ে বীরের মতই ফিরছেন।