১৭৮ বলে ৪ রান!

‘ধৈর্য কাকে বলে?’ এমন প্রশ্নের উত্তরই যেন উদাহরণসহ লিখছিলেন ফিল নেভিল ও স্টিভ ও’কাফি। তবে সেটা পরীক্ষার হলে কলম দিয়ে নয়, ক্রিকেট মাঠে ব্যাট দিয়ে। শুধুই স্কোরকার্ডের দিকে যাঁরা নজর রাখছিলেন, তাঁরা হয়তো বুঝতেও পারছিলেন না যে শ্রীলঙ্কা-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার পাল্লেকেল্লে টেস্টে খেলা হচ্ছে নাকি হচ্ছে না! ১৬১/৮—এই অবস্থাতেই দীর্ঘ সময় আটকে ছিল অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসের স্কোর।
একের পর এক বল ঠেকিয়ে প্রায় ৩০ ওভার উইকেটে টিকে ছিলেন নেভিল ও ও’কাফি। কিন্তু ১৭৮টি বল মোকাবিলা করে সংগ্রহ করেছেন মাত্র ৪ রান। সেটিও এসেছে বাউন্ডারি থেকে। অন্তত ১০০ বল খেলা জুটিতে সবচেয়ে কম রানরেটের নতুন রেকর্ডও গড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এ দুই ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কাও গড়েছে একটানা সবচেয়ে বেশি মেইডেন ওভারের রেকর্ড।
পাল্লেকেল্লে টেস্টের পঞ্চম দিনে ১৫৭ রানেই আট উইকেট হারানোর পর হার প্রায় নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার। দশম ব্যাটসম্যান হিসেবে উইকেটে এসেছিলেন ও’কাফি। টানা ছয়টি মেইডেন ওভারের পর মেরেছিলেন একটি চার। এরপর টানা ২৫.৪ ওভার (১৫৪ বল) আর একটিও রান নেননি ও’কাফি ও নেভিল। এর আগে ১৯৫০ সালের লর্ডস টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা ১৫.২ ওভার (৯২ বল) রানশূন্য ছিল ইংল্যান্ড।
নবম উইকেটে ও’কাফি ও নেভিলের ১৭৮ বলে ৪ রানের জুটির রানরেট ছিল ০.১৩। টেস্টে এর আগে এত ধীরগতিতে রান সংগ্রহ করতে দেখা গেছে হাশিম আমলা ও এবি ডি ভিলিয়ার্সকে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে ২৫৩ বলে ২৭ রানের জুটি গড়েছিলেন এ দুই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। তাঁদের জুটির রান রেট ছিল ০.৬৪।
নবম উইকেটে ও’কাফি ও নেভিলের ব্যাটিং দেখে একসময় মনে হয়েছিল, অবিশ্বাস্য একটা ঘটনাই ঘটিয়ে দেবে অস্ট্রেলিয়া। ড্র হয়ে যাবে পাল্লেকেল্লে টেস্ট। তবে শেষ পর্যন্ত সেই প্রতিরোধ ভাঙেন ধনঞ্জয় ডি সিলভা। ৮৬তম ওভারে আউট করেন নেভিলকে। ১১৫ বল খেলে মাত্র ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক। দুই ওভার পর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন ও’কাফি। তিনি খেলেছেন ৯৮ বলে ৪ রানের ইনিংস। শ্রীলঙ্কা পেয়েছে ১০৬ রানের জয়।