লিড বাড়াতে নেমে জোড়া ধাক্কা খেল ভারত
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ থেকে ২২৭ রানে এগিয়ে ছিল ভারত। সুযোগ ছিল বাংলাদেশকে ফলোঅনে আবারও ব্যাট করতে পাঠানোর। কিন্তু, সেটা না করে লিড আরও বাড়িয়ে নিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে ভারত। নিজেদের পুঁজি শক্ত করতে নেমে এরই মধ্যে জোড়া ধাক্কা খেয়েছে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই রোহিত শর্মাকে ৫ রানে বিদায় করেন তাসকিন আহমেদ। এরপর জয়সওয়ালকে ১০ রানে নিজের শিকার বানান নাহিদ রানা। ২৮ রানে দুই উইকেট হারিয়েও ছুটছে স্বাগতিকরা।
ব্যাটিং দুর্দশায় চেন্নাইতে ডুবল বাংলাদেশ
বল হাতে দিনের শুরুটা পরিকল্পনা মতোই করেন হাসান মাহমুদরা। ভারতকে গুঁড়িয়ে দেন ৪০০’র নিচে। কিন্তু, ব্যাটিংয়ে ব্যর্থতার চরম নজির দেখালেন সাদমান-মুমিনুলরা। প্রতিরোধ তো দূরে, একের পর এক ব্যাটারদের আশা-যাওয়ার মিছিলে ফলোঅনও এড়াতে পারেননি বাংলাদেশ। ব্যর্থতার মঞ্চায়ন করে অলআউট হয় মাত্র ১৪৯ রানে।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৪৭.১ ওভার স্থায়ী হয় বাংলাদেশের ইনিংস। পারল না ফলোঅন এড়াতেও। প্রথম ইনিংসে ভারতের থেকে ২২৭ রানে পিছিয়ে থেকে অলআউট হলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
আজ শুক্রবার স্কোরবোর্ডে ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান নিয়ে চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরু করে ভারত। গত দিনের মতো অশ্বিন আর জাদেজাকে ছুটতে দেননি বাংলাদেশের পেসাররা। দিনের শুরুতেই জাদেজাকে নিজের শিকার বানান তাসকিন আহমেদ। আগের দিন ৮৬ রানে শেষ করা জাদেজা আজ আর রান তুলতে পারেননি।
পরের ব্যাটার আকাশ দ্বীপকেও থামান তাসকিন। ৩০ বলে ১৭ রানে বেশি যোগ করতে পারেননি আকাশ। এরপর থামান অশ্বিনকে। আগের দিন ১০২ রানে অপরাজিত থাকা অশ্বিন আজ ১১ রান যোগ করেই ফেরেন সাজঘরে। তাসকিনের করা স্ট্যাম্পের বাইরের বল সজোরে মারেন অশ্বিন। লক্ষ্য ছিল বাউন্ডারি। তবে, সেটি হতে দেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। লুফে নেন ক্যাচ। ১৩৩ বলে ১১৩ রানে থামে তার ইনিংস।
ভারতের শেষ ব্যাটার হিসেবে নামা বুমরাহকে বিদায় করে ব্যাক টু ব্যাক ফাইফারে নাম লেখান হাসান মাহমুদ। ভারতের মাটিতে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি হিসেবে পাঁচ উইকেট পাওয়ার গৌরব অর্জন করেন হাসান। তাসকিন ও হাসানের দাপটে শেষ পর্যন্ত ৩৭৪ রানে থামে ভারত।
বোলিংয়ের এমন দারুণ উচ্ছ্বাস ব্যাটিংয়ে নামতে নামতেই আবারও মিলিয়ে গেল। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় বোলারদের সামনে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। দলীয় ৪০ রানেই পাঁচ টপঅর্ডার বিদায় নেন।
প্রথমটা ধসটা শুরু সাদমান ইসলামকে দিয়ে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই জাসপ্রীত বুমরাহর অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে ভেতরে ঢোকা বল না খেলে ছেড়ে দেন সাদমান। সেই বল অফ স্টাম্পের বেল উড়িয়ে দেয়। এরপর ২২ রানে আকাশের বলে বোল্ড জাকির হাসান (৩)। চারে নামা মুমিনুল তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। তিনি পড়েন আকাশ দ্বীপের ফাঁদে।
দলের বিপর্যয়ে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আজও চরম ব্যর্থ। হাল ধরা তো দূরে উল্টা সিরাজের বলে খোঁচা মেরে কোহলির হাতে ক্যাচ উপহার দেন শান্ত। ৩০ বল টিকে ২০ রানে থামে তার ইনিংস।
মিডল অর্ডারে নেমে মুশফিকুর রহিমও পারেননি হাল ধরতে। এমন বিপর্যয়ে কিছুটা আশা দেখান সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। দুজনের ব্যাটে মনে হয়েছিল লড়াইয়ে ফিরতে পারে বাংলাদেশ। কিন্তু না, ভক্তদের ভুল প্রমাণ করে অহেতুক শট খেলে সাজঘরে ফিরলেন লিটন দাস।
জাদেজার অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি সুইপ করে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক আজ ফিরলেন মাত্র ২২ রানে।
একই বোলারের ফাঁদে পা দিলেন সাকিবও। জাদেজার স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারি রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে আউট হন সাকিব। বল তার ব্যাটে লেগে জুতায় পড়ে উপরে উঠে যায়, এই সুযোগটা লুফে নিয়ে ক্যাচ নেন পন্থ। ৬৪ বলেই থেমে যায় ৩২ রান করা সাকিবের ইনিংস।
একের পর এক বিদায়ে ক্রিজে শেষ আশা হয়ে ওঠেন মিরাজ। একদিকে ফলোঅনের শঙ্কা, অন্যদিকে সঙ্গ দেওয়ার কেউ নেই। একা মিরাজ কতটুকুই বা পারতেন টানতে? মিরাজ টেলএন্ডারদের নিয়ে চেষ্টা করেন। কিন্তু যোগ সঙ্গীর অভাবে তিনিও পারলেন না ফলোয়ানের বাধা কাটাতে। উইকেটে সবাই আউট হওয়ার পর শেষ ব্যাটার হিসেবে ২২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ।