ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের বিতর্কিত রান-আউট নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিল এমসিসি

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই আলোচনা-সমালোচনা আর বিতর্ক। এশিয়া কাপে পুরুষদের ক্রিকেটে হ্যান্ডশেক নিয়ে বিতর্ক হওয়ার পর এবার নারীদের ক্রিকেটে বিতর্ক উঠেছে রানআউট নিয়ে। পাকিস্তানি ব্যাটার মুনিবা আলীর রানআউটের বিষয়টি নিয়ে অনেক কথা উঠেছে। তবে শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে ক্রিকেটের নিয়মপ্রণয়নকারী সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)।
এমসিসি বলছে মুনিবা আউট ছিল। একই সাথে তারা ব্যাখ্যাও করেছে যে কীভাবে এই ব্যাটরের আউটটি কার্যকর হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে পাকিস্তানের ইনিংসের চতুর্থ ওভারে। কলম্বোতে ভারতের দেওয়া ২৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছিল পাকিস্তান। চতুর্থ ওভারে ক্রান্তি গৌড়ের একটি বল মুনিবার প্যাডে লাগে। ভারতের খেলোয়াড়রা এলবিডব্লিউ-র জন্য আবেদন করে। কিন্তু আম্পায়ার সাড়া দেননি।
ঠিক সেই সময়ই মুনিবা ব্যাট দিয়ে ক্রিজ স্পর্শ করে আবার ওপরে তুলে নেন। ওই মুহূর্তে ভারতের দীপ্তি শর্মা থ্রো করে স্টাম্প ভাঙলে রানআউটের আবেদন করে ভারত।
প্রথমে টিভি আম্পায়ার স্ক্রিনে ‘নট আউট’ সিদ্ধান্ত দেখান। কিন্তু পরে রিপ্লেতে দেখা যায়, থ্রো আসার মুহূর্তে মুনিবা ব্যাট বাতাসে তুলে নিয়েছেন এবং তার দুই পা-ই ক্রিজের বাইরে ছিল। এরপরই আম্পায়ার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে তাকে আউট ঘোষণা করেন।
এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে অধিনায়ক ফাতিমা সানা সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে থাকা চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক জড়ান। এমনকি তিনি মুনিবাকে মাঠেই থাকতে বলেন বলে ধারণা করা হয়।
অনেকেই আইসিসির নিয়ম ৩০.১.২ দেখিয়ে বলছেন, যেহেতু মুনিবা কিছু মুহূর্ত আগে ব্যাট দিয়ে ক্রিজে পৌঁছেছিলেন, তাই তাকে আউট দেওয়া ঠিক হয়নি। কিন্তু ক্রিকেটের নিয়ম সংস্থা এমসিসি জানিয়েছে, ওই আইন শুধু তখনই প্রযোজ্য হয় যখন ব্যাটার দৌড়াতে গিয়ে বা ডাইভ দিয়ে ক্রিজে ঢোকার সময় দুর্ঘটনাবশত ব্যাট বা পা বাতাসে উঠে যায়।
২০১০ সালে চালু হওয়া এই নিয়মটিকে অনেক সময় ‘বাউন্সিং ব্যাট ল’ বলা হয়। এমসিসি ব্যাখ্যা করেছে, ‘এই নিয়মটি করা হয়েছে ব্যাটারদের সুরক্ষা জন্য, যাতে দৌড়াতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে ব্যাট মাটি থেকে লাফিয়ে ওঠে কিংবা দৌড়ানোর স্বাভাবিক ভঙ্গিতে দুই পা সাময়িকভাবে বাতাসে উঠে গিয়ে ক্রিজের সঙ্গে যোগাযোগ হারালে সেটাকে যেনো আউট ধরা না হয়।’
তবে এমসিসি এটিও বলেছে যে, ‘এই নিয়ম তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়, যারা দ্বিতীয়বার রান নিতে ঘুরছেন, ভারসাম্য হারাচ্ছেন বা মুনিবার ক্ষেত্রে যেটি হয়েছে—ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাট ওপরে তুলে নেয়।’
এই ব্যাখ্যার ভিত্তিতে এমসিসি জানায়,‘তৃতীয় আম্পায়ার যে আউট দিয়েছেন, সেটি একেবারেই সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল।’
ক্রিকেট আইনে ধারা ৩০.১.১ অনুযায়ী, ‘যতক্ষণ না ব্যাটার বা তার ব্যাটের কোনো অংশ সেই প্রান্তের পপিং ক্রিজের ভিতরে মাটি স্পর্শ করে, ততক্ষণ তাকে ক্রিজের বাইরে ধরা হবে।’
ধারা ৩০.১.২ বলছে, ‘যদি ব্যাটার দৌড়ে বা ডাইভ দিয়ে ক্রিজে পৌঁছে মাটি স্পর্শ করেন এবং তারপর ব্যাট বা শরীর মাটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তাহলে তাকেও নট আউট ধরা হবে — কিন্তু এই নিয়ম মুনিবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।’
এমসিসি স্পষ্ট করেছে, এই ম্যাচে মুনীবা দৌড়ে আসা বা ডাইভিং অবস্থায় ছিলেন না। তাই ওই আইন এখানে প্রযোজ্য নয়।