ব্যাটিং স্বর্গেও ব্যর্থ ব্যাটাররা, সিরিজ হারল বাংলাদেশ
চট্টগ্রামের সাগরিকায় যে ঝড় তুলেছিলেন শাই হোপ-আলিক আথানেজরা, সেটি থামিয়েছিলে নাসুম আহমেদ-রিশাদ হোসেন-মুস্তাফিজুর রহমানরা। দেড়শ পার হওয়ার আগেই আটকে রেখেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এরপর দায়িত্ব ছিল ব্যাটারদের। সেই দায়িত্ব নিতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়-জাকের আলী-শামীম পাটোয়ারীরা।
ব্যাটিং স্বর্গ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামেও অসহায় বাংলাদেশের ব্যাটাররা। এর উপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল্ডাররা একের পর এক ক্যাচ ফেলে দিলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি ব্যাটাররা। ফলাফল হিসেবে ব্যর্থ হয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচ হেরে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ খোয়ালো বাংলাদেশ।
আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাব দিতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। ১৪ রানের জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
রান তাড়ায় নেমে শুরু থেকেই মন্থর গতিতে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ। দেখেশুনে খেলে উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টায় থাকলেও সেটি করতে পারেননি। চতুর্থ ওভারে ৯ বলে ৫ রান করে ফিরে যান সাইফ হাসান।
তিন নম্বরে নেমে লিটন দাস শুরুটা ভালোই করেছিলেন। রানের চাকা সচল রাখছিলেন তিনি। তবে বেশি সময় উইকেটে টিকতে পারেননি তিনি। ১৭ বলে ২৩ রান করে আকিল হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন লিটন।
এরপর দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হন তাওহিদ হৃদয়ও। ১৪ বলে ১২ রান করে দলের বিপদ বাড়িয়ে ফেরেন তিনি। শুরুতে উইকেটে টিকে থেকেও দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি তামিম। সমান ৩ ছক্কা-চারে ৪৮ বলে ৬১ রান করে ফেরেন তিনি।
তখনো বাংলাদেশের আশা ছিল। কিন্তু একম্যাচ পরে একাদশে সুযোগ পেয়ে হাঁসফাঁস করতে থাকা জাকের আলী অনিক সেটিকে নিরাশায় পরিণত করেন। শামীম হোসেন পাটোয়ারীও একই পথের পথিক হন। জাকের ১৮ বলে ১৭ আর শামীম ২ বলে ১ রান করে ফেরেন।
বাকিদের ব্যর্থতায় কঠিন সমীকরণ মেলাতে পারেননি রিশাদ হোসেন-তানজিম সাকিবরা। বাংলাদেশ থামে ১৩৫ রানে।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনার ব্র্যান্ডন কিংকে এক রানে ফেরত পাঠান তাসকিন আহমেদ। এরপরই বিপরীত চিত্র দেখে বাংলাদেশ। আলিক আথানেজ আর শাই হোপ মিলে বাংলাদেশের বোলারদের শাসন করেন পরের ১০ ওভার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫৯ বলে ১০৫ রান তুলেছিলেন এই দুজন।
১১তম ওভারে ক্যারিবীয় ঝড় থামিয়ে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। ১১ ওভারে জোড়া আঘাত হানেন নাসুম আহমেদ। ৩৩ বলে ৫২ রান করা আথানেজকে ফিরিয়ে ঝড় থামানোর পরের বলেই ফেরত পাঠান শূন্য রান করা শেরফান রাদারফোর্ডকে।
পরের ওভারে মোস্তাফিজ এসে ফেরত পাঠান শাই হোপকে। ৩৬ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে হোপ ফেরার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। ১৪তম ওভারে বোলিংয়ে এসে ম্যাচের লাগাম পুরোপুরি বাংলাদেশের হাতে এনে দেন রিশাদ হোসেন। ফেরত পাঠান দুই মারকুটে ব্যাটার রোভম্যান পাওয়েল (৯ বলে ৩) ও জেসন হোল্ডারকে (৪ বলে ৪)। শেষ ওভারে আরও উইকেট তুলে নেন ফিজ।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজ। দুটি করে উইকেট গেছে নাসুম ও রিশাদের ঝুলিতে। একটি উইকেট পেয়েছেন তাসকিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ২০ ওভারে ১৪৯/৯ (কিং ১, আথানেজ ৫২, হোপ ৫৫, রাদারফোর্ড ০, পাওয়েল ৩, হোল্ডার ৪, শেফার্ড ১৩, পিয়েরে ০, আকিল ১, চেজ ১৭; সাকিব ৪-০-২৩-০, তাসকিন ৩-০-২৮-১, মুস্তাফিজ ৪-০-২১-৩, নাসুম ৪-০-৩৫-২, সাইফ ১-০-৯-০, রিশাদ ৩-০-২০-২, শামীম ১-০-১১-০)
বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১৩৫/৮ (সাইফ ৫, তামিম ৬১, লিটন ২৩, হৃদয় ১২, জাকের ১৭, শামীম ১, রিশাদ ০, নাসুম ২, সাকিব ৮*; সিলস ৪-০-৩০-০, হোল্ডার ৪-০-২০-২, শেফার্ড ৪-০-২৯-৩, চেজ ৩-০-২১-০, আকিল ৪-০-২২-৩, পিয়েরে ১-০-১৩-০)
ফলাফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪ রান জয়ী।

স্পোর্টস ডেস্ক