শততম টেস্টেই থেমে যেতে চান না মুশফিক
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে মুশফিকুর রহিমের ক্যারিয়ারটা দীর্ঘ ২০ বছরের। ২০০৫ সালে লর্ডসে টেস্ট অভিষেকের পর মিরপুরে খেললেন ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের ভরসা হয়ে ছিলেন মুশফিক। শততম টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসে করলেন হাফ সেঞ্চুরি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট জয়ের পর হলেন ম্যাচ সেরা। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জানালেন এখনও তিনি খেলা চালিয়ে যেতে চান।
আয়রাল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে ম্যাচ সেরা হওয়ার পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে মুশফিক বলেন, আল্লাহ আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। ১০০টা টেস্ট খেলেছি, সামনে আরও খেলতে চাই। দেশের হয়ে ১০০ টেস্ট খেলতে পারার সৌভাগ্যটা বিশেষ। প্রতিটি মুহূর্ত ভীষণ উপভোগ করি, আজও মনে হচ্ছে যেন প্রথম ম্যাচটাই খেলছি। নিজেকে সত্যিই অনেক ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।
মুশফিকের পেশাদারিত্ব ও পরিশ্রমই তার ক্যারিয়ারকে এতদূর টেনে এনেছে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও টেস্ট ক্রিকটে খেলে যেতে চান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। দলের জন্য নিজের সর্বোচ্চটাই দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। সতীর্থদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন মুশফিক, সিনিয়র হিসেবে শেখাতে চান তরুণদের।
এই বিষয়ে মুশফিক বলেছেন, আমি সত্যিই অনেক ভাগ্যবান। সতীর্থদের সঙ্গে যা কিছু পারি, সব ভাগ করে নিতে পারছি। একসময় নিজেকে তরুণ খেলোয়াড় মনে হতো, কিন্তু এখন আর তা নেই। আমি নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করি। দলের সিনিয়র হিসেবে এখন তরুণদের পথ দেখানোই আমার দায়িত্ব। আমি নিশ্চিত, ওরা আমার কাছ থেকেও শিখবে, অন্যদের কাছ থেকেও শিখবে। আশা করি, সবাইকে নিয়ে আমরা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে নিতে পারব।
মুশফিকের শততম টেস্টে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২১৭ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। মুশফিকের স্মরণীয় এই টেস্টের ফলাফলটা দেখে নিন স্কোরকার্ড থেকেই…
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১৪১.১ ওভারে ৪৭৬/১০ (জয় ৩৪, সাদমান ৩৫, মুমিনুল ৬৩, শান্ত ৮, মুশফিক ১০৬, লিটন ১২৮, মিরাজ ৪৭, তাইজুল ৪, মুরাদ ১১, ইবাদত ১৮*, খালেদ ৮; নিল ১১-১-৪৭-০, ক্যামফার ১০-০-৩২-০, ম্যাকব্রাইন ৩৩.১-৩-১০৯-৬, হামফ্রিস ৫০-৫-১৫১-২, হোয় ৩৪-৩-১১৫-২, টেক্টর ৩-০-১০-০)
আয়ারল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ৮৮.৩ ওভারে ২৬৫/১০ (বালবার্নি ২১, স্টার্লিং ২৭, কারমাইকেল ১৭, টেক্টর ১৪, ক্যাম্পার ০, টাকার ৭৫*, ডোহেনি ৪৬, ম্যাকব্রাইন ০, নিল ৪৯, হোয়ে ৪, হাফফ্রিস ৪; ইবাদত ১২-১-৪৭-১, খালেদ ৮-০-৩৯-২, তাইজুল ৩৫.৩-৬-৭৬-৪, মুরাদ ২১-৩-৫৩-২, মিরাজ ৯-১-৩৮-১, মুমিনুল ৩-১-৫-০)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৬৯ ওভারে ২৯৭/৪ ডিক্লেয়ার ( জয় ৬০, সাদমান ৭৮, শান্ত ১, মুমিনুল ৮৭, মুশফিক ৫৩*; নিল ৯-১-৪৮-১, হামফ্রিস ১৫-০-৫৪-০, ম্যাকব্রাইন ২৬-২-৮২-১, হোয়ে ১৭-০-৮৪-২, টেক্টর ২-০-১২-০)
আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস : ১১৩.৩ ওভারে ২৯১/১০ ( বালবার্নি ১৩, স্টার্লিং ৯, কারমাইকেল ১৯, টেক্টর ৫০, ক্যাম্ফার ৭১*, টকার ৭, ডোহেনি ১৫, ম্যাকব্রাইন ২১, নিল ৩০, হোয়ে ৩৭, হামফ্রিস ০ ; ইবাদত ১১-৩-২৯-০, খালেদ ১২-০-৪৫-১, তাইজুল ৪০-৭-১০৪-৪, মুরাদ ২২.৩-১১-৪৪-৪, মিরাজ ২৭-১১-৪৯-১, মুমিনুল ১-০-২-০)
ফল : বাংলাদেশ ২১৭ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা : মুশফিকুর রহিম
সিরিজ সেরা : তাইজুল ইসলাম
সিরিজ : বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে জয়ী

স্পোর্টস ডেস্ক