পৃথিবীর সেরা পাঁচ সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প
সর্বক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিজ্ঞানের আধুনিকায়নের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে অনেক বড় বড় পাওয়ার প্ল্যান্ট, যেখান থেকে সর্বত্র সবার প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে নিরবচ্ছিন্ন করার জন্য পরমাণু শক্তিকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলো। পরমানু শক্তি ব্যবহারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া হলো।
কিন্তু পরমানু শক্তি ব্যবহার করে তৈরি বিদ্যুৎ পরিবেশের জন্য হুমকি। সেজন্য অনেক দেশ এখন পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছে, তারই অংশ হিসেবে উন্নত দেশগুলোতে সৌর বিদ্যুৎ নিয়ে চলছে গবেষণা।
উন্নত দেশগুলো এখন সোলার প্লান্টের কার্যকারিতা বাড়ানোর ওপর অনেক মনোযোগ দিচ্ছে। এই গবেষণার অংশ হিসেবে অনেক উন্নত দেশে এখন বড় আকারের সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করা হয়েছে। সোলার ইনশিওর ওয়েবসাইট জানিয়েছে পৃথিবীর সেরা পাঁচটি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের খবর।
১. ওলমেডিলা ফটোভোলাটিক পার্ক, স্পেন
ওলমেডিলা ফটোভোলাটিক পার্কে এক লাখ ৬২ হাজারের বেশি সোলার ফটোভোলাটিক প্যানেল
ব্যবহার করা হয়েছে, যা অতি উত্তপ্ত সূর্য থেকে সর্বোচ্চ ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে
পারবে। এই প্ল্যান্টটি তৈরিতে সময় লেগেছিল ১৫ মাস, খরচ হয়েছিল ৫৩০ মিলিয়ন ডলার। এই
পাওয়ার প্যানেলটি বর্তমান সময়ের অন্য সব প্রচলিত পাওয়ার প্যানেলের মতোই। এতে
ব্যবহৃত সোলার প্যানেলগুলো সিলিকনের তৈরি। সিলিকনের সোলার প্যানেল হওয়ায় এটা বেশ
ব্যয়বহুল।
২. পিউরতোলানো ফটোভোলাটিক পার্ক, স্পেন
রিনোভালিয়া পিউরতোলানো ফটোভোলাটিক পাওয়ার স্টেশনটির বিদ্যুৎ সরবরাহ ক্ষমতা হচ্ছে
৫০ মেগাওয়াট। ৩৯ হাজার পরিবারে প্রতি বছরে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হয়, এই পাওয়ার
প্ল্যান্টটি ওই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে থাকে। তত্ত্বীয়ভাবে এটি বছরে প্রায় ৮৪ হাজার টন
কার্বন ডাই-অক্সাইড নিরসন করে এবং ২৫ বছরে ২.১ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নিরসন
করবে।
৩. মোউরা ফটোভোলাটিক পাওয়ার স্টেশন, পর্তুগাল
মোউরা ফটোভোলাটিক পাওয়ার স্টেশনটি পর্তুগালের মোউরা পৌরসভার এলেন্টিজোতে
অবস্থিত।এই প্রকল্পটি তৈরিতে মোট ১৩ মাস সময় লেগেছিল, যা ২০০৮ সালে তৈরি হয় এবং পর্তুগালে একই ধরনের আরেকটি প্রকল্প তৈরি করা হয়। যেখানে তাদের মোট খরচ হয় ২৫০ মিলিয়ন ইউরো। এই পাওয়ার স্টেশনটির ধারণ ক্ষমতা হচ্ছে ৪৬ মেগাওয়াট, এই পাওয়ার স্টেশনটি তৈরিতে তিন লাখ ৭৬ হাজার সোলার প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে। ৩২ মেগাওয়াট ধারণ ক্ষমতার আরেকটি পাওয়ার স্টেশনে এক লাখ ৯০ হাজার সোলার প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে। ১০ মেগাওয়াট ধারণ ক্ষমতার পাওয়ার স্টেশনে ৫২ হাজার সোলার প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে। ফটোভোলাটিক পাওয়ার স্টেশনটি তৈরিতে ৩২০ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছিল।
৪. ওয়ালপোলেঞ্জ সোলার পার্ক, জার্মানি
ওয়ালপোলেঞ্জ সোলার পার্কটি হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ফটোভোলাটিক পাওয়ার সিস্টেম। এটি তৈরি করা হয়েছে জার্মানির পূর্বে লেইপজিংয়ের সামরিক বিমান ঘাটিতে। এই পাওয়ার প্ল্যান্টে থিন ফ্লিম টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার সোলার থিন ফ্লিম মোডিউল ব্যবহার করা হয়েছে, যা বছরে প্রায় ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে। এই প্রকল্পটি তৈরিতে খরচ হয় মোট ১৩০ মিলিয়ন ইউরো।
৫. আরনিডো সোলার প্ল্যান্ট, স্পেন
এই সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পটি ঘণ্টায় ৩৪ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে, যা দিয়ে ১২ হাজার বাড়িতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব। এই প্রকল্প প্রতি বছর প্রায় তিন লাখ ৭৫ হাজার টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এই প্রকল্পটি তৈরি করতে প্রায় ৭০ হেক্টর জমি এবং এক লাখ ৭২ হাজার প্যানেল ব্যবহার হরা হয়েছে। এই প্রকল্পটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৮০ কোটি ইউরো।