বায়োনিক চোখে অন্ধের পৃথিবী দর্শন

এক দশক আগে দুরারোগ্য ব্যাধিতে দৃষ্টিশক্তি হারান যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালান ডেরাড (৬৮)। রোগের কোনো চিকিৎসাই ছিল না। সম্প্রতি তাঁর ক্ষেত্রে চোখে স্থাপন করা হয়েছে বায়োনিক (রোবট প্রযুক্তির) দৃষ্টিসহায়ক। তিনি এখন দেখতে পাচ্ছেন।
মিনোসোটার বাসিন্দা অ্যালান ডেরাড প্রায় দুই দশক আগে ‘রেটিনা পিগমেনটোসা’ নামক চক্ষুরোগে আক্রান্ত হন। ধীরে ধীরে দৃষ্টি শক্তি হারাতে থাকেন। ১০ বছরে তিনি পুরোপুরি দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন। চক্ষুরোগটির কোনো প্রতিষেধক বা চিকিৎসা নেই। সম্প্রতি তাঁর চোখে ‘সেকেন্ড সাইট’ নামে একটি পরীক্ষামূলক রোবটিক দৃষ্টিসহায়ক চোখ স্থাপন করা হয়েছে। ডেরাড বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের আকৃতি, মানুষকে দেখতে পারে। একই সঙ্গে নিজের প্রতিচ্ছবিও দেখতে পান ডেরাড।
সেকেন্ড সাইট প্রস্তুতকারী গবেষকরা বলেন, চোখের রেটিনার ওপর আলো পড়ে তা তরঙ্গ হয়ে দৃষ্টি স্নায়ুতে (অপটিক নার্ভ) যায়। এই স্নায়ু মস্তিষ্কে তরঙ্গ পাঠায় যে কারণে মানুষ দেখতে পায়। অন্ধ ব্যক্তির ক্ষেত্রে রেটিনা কাজ করে না। সেকেন্ড সাইট বায়োনিক চোখ আলোকে তরঙ্গ করে দৃষ্টি স্নায়ুতে পাঠায়। এ কারণে অন্ধ ব্যক্তি দেখতে পায়।
গবেষকরা বলেন, সেকেন্ড সাইট বায়োনিক চোখের জন্য অ্যালান ডেরাড ছিলেন আদর্শ রোগী। গত মাসে তাঁর ডান চোখের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র বৈদুতিক সার্কিট (মাইক্রো চিপ) স্থাপন করা হয়। এর দুই সপ্তাহ পর একটি চশমার মধ্যে বাকি যন্ত্রাংশও যুক্ত করে দেওয়া হয়। পরে সেকেন্ড সাইট বায়োনিক চোখ চালু করা হয়।
অ্যালান ডেরাডের চোখে বায়োনিক চোখ প্রতিস্থাপনকারী চিকিৎসক রেমন্ড লেজ্জি বলেন, অন্ধকে পৃথিবীর সবকিছুই দেখা ও বোঝার ক্ষমতা দেয় বায়োনিক চোখ। একে পুরো কার্যক্ষম চোখ বলা চলে।
বায়োনিক চোখে অভ্যস্ত হতে প্রতিদিন ডেরাডকে প্রায় এক ঘণ্টা করে থেরাপির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এ ছাড়া মেনে চলতে হয় কিছু দিকনির্দেশনা।
বায়োনিক দৃষ্টিসহায়ক প্রসঙ্গে বলেন, কিছুটা অস্পষ্ট হলেও তিনি প্রায় সবকিছুই দেখতে পাচ্ছেন।