উচ্চ মূল্যের বিপরীতে স্বল্প চাহিদা ও তীব্র প্রতিযোগিতায় চাপের মুখে পড়েছে জার্মান মোটরগাড়ি শিল্প৷ চীনা নাগরিকরা নিজস্ব ব্র্যান্ডের গাড়ি বেছে নেয়ায় লোভনীয় চীনা বাজারও দিনদিন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠছে।

ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতিতে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে আগের চেয়ে। নতুন গাড়ির চাহিদাও কমে যাওয়ায় জার্মান অর্থনীতি সংকটের মুখে পড়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে।

এক সময়কার শক্তিশালী এই শিল্প ক্রমবর্ধমান কাঠামোগত সমস্যার কারণে গাড়ি নির্মাতারাও প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। জ্বালানি ইঞ্জিন থেকে বৈদ্যুতিক গাড়ি এবং চালকহীন গাড়ি নির্মাণের রুপান্তর প্রক্রিয়া ব্যয়বহুল হওয়ায় তহবিল সংকটও তৈরি হচ্ছে।  

২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে ফক্সভাগেন, মার্সিডিজ বেঞ্জ ও বিএমডাব্লিউসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিসংখ্যান সন্তোষজনক ছিল ৷ এ সময় তাদের যথেষ্ট প্রবৃদ্ধি হয় ৷ তবে বছরের বাকি ছয় মাসের গাড়ির কম অর্ডার চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য।

চীনের বর্ধমান বাজার

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গাড়ির বাজার চীন শুধু ভোক্তা হিসেবে নয়, বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রস্তুতকারক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ মূহুর্তে পৃথিবীতে প্রতি দুটি বৈদ্যুতিক গাড়ির একটি চলছে চীনের রাস্তায়।

চীনের মধ্যবিত্ত এবং ধনী-শ্রেণির মানুষের জন্য তাদের নিজস্ব গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুতগতিতে তাদের উৎপাদন এগিয়ে নিয়ে চলেছে। চীনা নাগরিকদের কাছে পশ্চিমের গাড়ির ব্র্যান্ডগুলো চেয়ে নিজস্ব ব্র্যান্ড জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। চীনের বাজারের সঙ্গে তাল মেলাতে জার্মান কোম্পানি ফক্সভাগেন চীনা প্রতিষ্ঠান পেং এর সাথে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে করেছে৷

ট্রাম্প কার্ড ডিজিটাল ফিচার

অত্যাধুনিক ডিজিটাল ফিচারের কারণে চীনা উৎপাদিত যানবাহন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, বিশেষ করে উন্নত সহায়তা এবং ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেমের জন্য। চীনের জনাকীর্ণ রাস্তায় ট্র্যাফিক পরিস্থিতির কারণে এটি বেশ সহায়ক। আরাম ও গুণমানের মতো বিষয়গুলির ক্ষেত্রে, তারা প্রতিষ্ঠিত গাড়ি নির্মাতাদের কাছাকাছি মানের সেবা দিচ্ছে। গবেষণা অনুসারে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে দামী ব্র্যান্ডের গাড়ির তুলনায়ও কিছুটা ভালো বলে মনে করা হয়।

মেরিক্স ইনস্টিটিউটের চীন বিশেষজ্ঞ জর্জ সেবাস্তিয়ান ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘জার্মান অটোশিল্প সম্ভবত চীনের গাড়ি খাতে গত ২০ বছরে একই প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করেনি।’