ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞায় ছাড় প্রত্যাহার করছে যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের পরমাণু কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞায় থাকা ছাড় প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ছাড় থাকায় এত দিন চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের কোম্পানিগুলো নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থেকেই ইরানের পরমাণু প্রকল্পে কাজ করতে পারত।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও গতকাল বুধবার রাতে এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, এখন থেকে ৬০ দিন পর ছাড় প্রত্যাহারের এ ঘোষণা কার্যকর হবে। তিনি বলেন, ইরান পরমাণু কর্মসূচি জোরদার করায় এ ছাড় প্রত্যাহার করা হচ্ছে। ইরানি সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এ খবর জানিয়েছে।
আরেক টুইটার বার্তায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানের দুজন পরমাণু বিজ্ঞানীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা জানান। মাইক পম্পেও ইরানি বিজ্ঞানীদের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘মাজিদ আগায়ি’ ও ‘আমজাদ সাজেগার’ নামের দুজন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে।
২০১৫ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওমাবার শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় জাতিগোষ্ঠী ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা স্বাক্ষর করে। ওই সমঝোতার ভিত্তিতে ইরানের ওপর জাতিসংঘসহ পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয় এবং বিনিময়ে তেহরান তার পরমাণু কর্মসূচিতে কিছুটা কাটছাঁট করে।
২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি থেকে ওই সমঝোতার বাস্তবায়ন শুরু হলেও বারাক ওবামা প্রশাসন তখন থেকেই এ সমঝোতা থেকে ইরান যাতে পূর্ণ সুবিধা ভোগ করতে না পারে সেজন্য নানা পদক্ষেপ নেয়। এরপর ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেই এ সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন এবং ২০১৮ সালের ৮ মে সে হুমকি বাস্তবায়ন করেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘের প্রস্তাব লঙ্ঘন করে যুক্তরাষ্ট্রেকে এ সমঝোতা থেকে বের করে নিয়ে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। সারা বিশ্ব ট্রাম্পকে এ কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানালেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এরপর থেকে মার্কিন প্রশাসন ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়াতে থাকে, যার ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে।