উত্তাল ইরাক : নাজাফে ইরানি কনস্যুলেটে বিক্ষোভকারীদের আগুন

ইরাকে চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মাঝেই দক্ষিণাঞ্চলীয় নাজাফ শহরে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের কনস্যুলেট ভবনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে একদল বিক্ষোভকারী। ঘটনার পর নাজাফ শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাতে বিক্ষোভকারীদের ভেতর থেকে একটি দল ‘ইরাক থেকে ইরান দূর হোক’ স্লোগান দিতে দিতে নাজাফের ইরানি কনস্যুলেট ভবনের চত্বরে ঢুকে পড়ে এবং পুরো ভবনে আগুন লাগিয়ে দেয়। ইরাকের পুলিশ ও অগ্নিনির্বাপণকারী সংস্থার সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি, বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও ইরানি সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে।
বিক্ষোভকারীরা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার আগে সেখান থেকে কনস্যুলেট ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কড়া নিরাপত্তা দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে ইরাকি পুলিশ জানিয়েছে। ইরানি কনস্যুলেট ভবনে বিক্ষোভকারীরা আগুন দেওয়ার পরপরই ইরাক সরকার নাজাফ শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় কারফিউ জারি করে।

এ নিয়ে চলতি মাসে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো ইরানি কনস্যুলেটে হামলা হলো। এর আগে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ইরাকের পবিত্র কারবালা শহরে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। ওই কনস্যুলেট ভবন থেকে ইরানের পতাকা নামিয়ে টাঙানো হয় ইরাকের পতাকা। এ সময় ভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও আশপাশের রাস্তায় অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি ছোড়ে পুলিশ।
এক বছরের কিছু বেশি সময় আগে প্রয়োজনীয় পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হন আদেল আবদেল মাহাদি। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই কর্মসংস্থানের সংকট, নিম্নমানের সরকারি পরিষেবা ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত ১ সেপ্টেম্বর ইরাকের রাজধানী বাগদাদের রাজপথে নামে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে কয়েক সপ্তাহ ধরে ইরাকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ও গুলি চালিয়ে বিক্ষোভাকারীদের ওপর চড়াও হলে এই বিক্ষোভ আরো জোরালো হয়ে ওঠে, ছড়িয়ে পড়ে ইরাকের বিভিন্ন শহরে। এদিকে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মাহাদিকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা ইরান প্রতিহত করছে, এমন অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের।
দুই মাস ধরে চলমান বিক্ষোভে ইরাকে অন্তত ৩৪৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।